কক্সবাজার প্রতিনিধি:
মিয়ানমারের জলসীমা থেকে উদ্ধারকৃত দেশে ফিরিয়ে আনা ১২৫জন বাংলাদেশীর মধ্যে ২৫ কিশোরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
বুধবার বেলা দুইটার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অরুন পালের আদালতে তাদেরকে তোলা হয়। আদালত রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মাধ্যমে এদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন। বয়স নির্ধারণের জন্য বাকি দুইজনকে নেওয়া হয়েছে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে।
জানা গেছে, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ২৫ জনের মধ্যে কক্সবাজার জেলার ২২ জন, বান্ধরবান জেলার ২ জন ও ঢাকার ১ জন। এরা হল, ঢাকার যাত্রাবাড়ীর স্কুল গলি এলাকার মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মোহাম্মদ রবিন (১৬), বান্দরবন জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চাকঢালা এলাকার নুর আহমদের ছেলে আমান উল্লাহ (১৭), লামা উপজেলার বিলছড়ি মাইজপাড়ার মনোয়ার হোসেনের ছেলে কাউছার আলম (১৬), কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার ভালুকিয়া পালং তুলাতলি এলাকার মৃত আয়াজ মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৭), ভালুকিয়া পালং থিমছড়ি এলাকার মোহাম্মদ আলমের ছেলে মামুনুর রশিদ (১৫), ভালুকিয়া পালং ফয়জাবাপের পাড়ার নজির আহমদের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৭), রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের পানিরছড়ার আবুল কালামের ছেলে আবু ছৈয়দ (১৬), দক্ষিণ মিঠাছড়ির উমখালী এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে ইরফান মিয়া (১৫), দক্ষিণ মিঠাছড়ি পানেরছড়া এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ (১৭) টেকনাফ উপজেলার শাহপরীরদ্বীপ এলাকার শামশুল আলমের ছেলে মোহাম্মদ ফয়সাল (১৪), শাহপরীরদ্বীপ এলাকার মোহাম্মদ নুরুচ্ছফার ছেলে শফিক আলম (১৫), টেকনাফ পৌর এলাকার নতুন পল্লান পাড়ার কলিম উল্লাহর ছেলে হাফিজুর রহমান (১৬), অলিয়াবাদ এলাকার হাজী মোক্তার আহমদের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৬), শাহপরীরদ্বীপ এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জিয়াবুল হাসান (১৩), শাহপরীরদ্বীপ এলাকার মোহাম্মদ ইয়াছিনের ছেলে ফায়সাল মিয়া (১৬), সাবরাং মুন্ডার ডেইল এলাকার মেহের হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ আলী (১৭), শাহপরীরদ্বীপ দক্ষিণ পাড়ার আব্দুল মোতালেবের ছেলে আব্দুর রহমান (১৫), কক্সবাজার সদর উপজেলার লারপাড়ার আবুল হোসেনের ছেলে শফিউল করিম (১৪), চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের খামার পাড়ার মৃত নাজির আহমদের ছেলে জানে আলম (১৬), ভারুয়াখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ করিম সিকদার পাড়ার জাফর আলমের ছেলে মোহাম্মদ ফিরোজ (১৭), মহেশখালী উপজেলার পুটিবিলা এলাকার মোহাম্মদ রফিকের ছেলে মিজানুর রহমান (১৬), কুতুবজোম ইউনিয়নের লাল মোহাম্মদ সিকদার পাড়ার জমির আহমদের ছেলে মনির উদ্দিন (১৭), মহেশখালীর পুটিবিলা এলাকার আবু জাফরের ছেলে কায়সার হামিদ (১৫), চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া তেচ্ছাপাড়ার মাহবুল আলমের ছেলে মোহাম্মদ মিনারুর রহমান (১৭), ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট এলাকার নুরুল কাদেরের ছেলে মিরাজ উদ্দিন (১৭)।
কক্সবাজার রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সেক্রেটারী আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, ৩জন ছাড়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক এসব কিশোরদের সবার বাড়ি কক্সবাজারে। বুধবার এদের সবাইকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ জানান, পরীক্ষায় নেয়ার ২ জনসহ বাকি ১০০ জনের তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মাধ্যমে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
প্রসঙ্গত, সাগরে ভাসমান অবস্থায় মিয়ানমারের জলসীমা থেকে উদ্ধার হওয়া অভিবাসি প্রত্যাশীদের মধ্যে পঞ্চম দফায় মঙ্গলবার ১২৫ বাংলাদেশীকে ফিরিয়ে আনা হয়। ফেরত আনা ১২৫ জনকে সীমান্তের বাংলাদেশ অভ্যন্তরে এনে কক্সবাজার জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে ৮ ও ১৯ জুন, ২২ জুলাই ও ১০ আগস্ট ৪ দফায় শনাক্ত হওয়া ৫০১ জন বাংলাদেশীকে ফেরত আনা হয়েছে। গত ২১ মে ২০৮ জন ও ২৯ মে ৭২৭ জন অভিবাসি প্রত্যাশীকে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে উদ্ধার করেছিল সে দেশের নৌ-বাহিনী। এরপর বাংলাদেশী হিসেবে দাবি করা তালিকা নিয়ে উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। ওই তালিকায় শনাক্ত হওয়া বাংলাদেশীদের পর্যায়ক্রমে ফেরত আনা হচ্ছে। মিয়ানমারের জলসীমা থেকে সাগরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত হওয়া পঞ্চম বারের মতো ১২৫ জন সহ ৬২৬ জনকে ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে ফেরত আনা হয়।