parbattanews

২৮ মাস পর খুলছে জন্ম নিবন্ধন সার্ভার: স্বস্তিতে উখিয়াবাসি

দীর্ঘ ২৮ মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে খুলতে যাচ্ছে জন্ম নিবন্ধন সার্ভার। দীর্ঘদিন পর জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম চালু হতে যাওয়ায় ভোগান্তিতে থাকা মানুষের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস এসেছে। অনেকে বলতে দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের কারনে আমরা যারা স্থানীয় তারা কেন এই খেসারত দিতে যাব?

সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। তিনি আরও বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে জন্মনিবন্ধন সার্ভার চালু হতে যাচ্ছে।

তবে, রোহিঙ্গাদের কথা মাথায় রেখে কক্সবাজার জেলার জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদানে কিছুটা কড়াকড়ি আরোপেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগের মতো ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা সচিব সরাসরি জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদান করতে পারবেন না।

 জেলা প্রশাসক নিশ্চিত করেছেন যে, উপজেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি আবেদনকারীদের জন্মস্থান এবং জাতীয়তা যাচাই করে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদান করবেন বলে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সূত্রমতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে প্রতিবেশী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের স্বীকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা। পুরনোসহ দেশে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ লাখ। আশ্রিত এসব রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় কক্সবাজারসহ কয়েকটি জেলার অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম। এর মধ্যে কেটে গেছে প্রায় ২৮ মাস। কিন্তু এখনও সচল হয়নি অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম। এরমধ্যে প্রায় ১১ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হয়েছে।

পরিকল্পিত উখিয়া চাই’ এর আহ্বায়ক, সাংবাদিক নুর মুহাম্মদ সিকদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জেলায় অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ভোগান্তির শেষ নেই স্থানীয়দের। ভোটার তালিকা হালনাগাদ থেকে শুরু করে চাকরির আবেদন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিসহ জন্ম নিবন্ধন সনদ দরকার হওয়া সকল কাজ নিয়ে দুর্ভোগ পড়তে হয়েছে সেবা প্রত্যাশীদের।

উখিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সরওয়ার আলম শাহীন বলেন, জন্মনিবন্ধনের কারনে উখিয়াসহ পুরো কক্সবাজার জেলার মানুষকে নানানমুখী সমস্যা পড়তে হয়েছে। এমনকি এক ধরনের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে জেলাবাসি।

দীর্ঘদিন পরে হলেও জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম চালু হতে যাওয়ায় সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, স্থানীয় মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমাদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম চালু করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই চিঠির অনুবলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠকে জেলা প্রশাসক মহোদয় জননিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ থাকার কথাটি উত্থাপিত করেন। এর প্রক্ষিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে জন্মনিবন্ধন সার্ভার চালু করার সিদ্ধান্ত নেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

Exit mobile version