parbattanews

২ বছরে বন্যহাতির আক্রমণে পর্যটকসহ ৬ জনের মৃত্যু

ফাইল ছবি

রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় বন্যহাতির তাণ্ডবে পর্যটকসহ বিভিন্ন মহলের মধ্যে হতাশা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত দু’বছরে বন্যহাতির আক্রমণে ৬জনের মৃত্যু হয়েছে।

পার্বত্য চট্রগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতায় কাপ্তাই রেঞ্জের নৌবাহিনী সড়ক, আগরবাগান, ব্যাংঙছড়ি শিল্প এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিগত কয়েক বছর যাবৎ চলতি ১১ মার্চ পর্যন্ত বন্য হাতির আক্রমণে পর্যটকসহ ৬ জনের নির্মম মৃত্যু হয়েছে।

সম্প্রতি লোকালয়ে এসে কয়েক লক্ষ টাকার বিভিন্ন ফসল ও বসতঘর, দোকানের ব্যাপক ক্ষতি করার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে হাতির আক্রমণে চলতি ৭ মার্চ নৌবাহিনী সড়ক বন উন্নয়ন ছাত্রাবাস এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন পয়তাল্লিশ উর্ধ্ব একজনকে হামলা করে হাত, পা, বিচ্ছিন্ন করে মেরে ফেলে। তার পাঁচ দিন পর অথ্যাৎ ১১ মার্চ একই এলাকায় ঢাকা তেঁজগাও টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অভিযেক (২১) তার ৬ বন্ধু নিয়ে রাঙ্গামাটি যাওয়ার পথে হাতির আক্রমণের স্বীকার হয়ে মৃত্যুবরণ করে।

৫ দিনের ব্যাবধানে ২ জনের নির্মম মৃত্যু হওয়ার দরুণ সকল পর্যটক, যানচালক, এলাকাবাসির মধ্যে চরম হতাশা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ নিয়ে প্রশাসনের মধ্যেও দেখা দিয়েছে চরম হতাশা।

এদিকে কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রোশন আরা রব জানান, তার অফিস কার্যালয়ের আশপাশ এলাকায় প্রতিদিন বন্যহাতি ঘুরাঘুরি করছে। হাতি দেখে তিনি এবং তার পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কি করণীয় এ বিষয়ে বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মহসিন তালুকদারের সাথে একাধিকবার কথা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসন মুনতাসির জাহান উক্ত ঘটনায় পরপর দু’জনের মৃত্যু হওয়ার দরুণ সকলকে সচেতনমূলক সকাল ৯টার পূর্বে এবং বিকাল ৫টার পর রাঙ্গামাটি, নৌবাহিনী সড়কে কোন যান চলাচল না করার জন্য আহ্বান জানান।

পার্বত্য চটগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান শাহ্ (ডিএফও) বলেন, উক্ত ঘটনায় আমরাও মর্মাহত। তিনি বলেন, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের আওতায় হাতির আক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য আগামী অর্থ বছরে আগস্ট-সেপ্টেম্বর ৪কি. মি. করে ৮ কিলোমিটার ফেন্সিং সোলার নির্মাণ করা হবে। এ অর্থ বছরে হওয়ার কথা ছিল, অর্থ ছাড় না হওয়ার দরুন তা করা করা হয়নি বলে উল্লেখ করেন।

এছাড়া তিনি জানান, হাতির করিডোরগুলোতে জনসচেতনমূলক ইতিমধ্যে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং এলাকার জনসাধারণকে নিয়ে এ সংক্রান্ত দশ দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আমরা সকল প্রামান সাপেক্ষে ক্ষতিপূরন দিয়ে আসছি। যে ছাত্র বন্যহাতির আক্রমণে মারা গেছে আমরা তাদের পরিবারকে সরকারের নিয়ম অনুযায়ী এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন। এদিকে বনের মধ্যে পশু খাদ্য না থাকায় এবং বন উজাড় হওয়ার দরুন বিভিন্ন বন্য প্রাণী লোকালয়ে খাদ্যর সন্ধ্যানে এসে হামলা করছে এবং মানুষের বসত-বাড়ি, ফসল ক্ষতি করছে বলে এলাকার নানাজন মত প্রকাশ করে। এ ব্যাপারে বন বিভাগ সু-ব্যবস্থা নিবে বলে মন্তব্য করে।

Exit mobile version