parbattanews

৭ বছর পর কাপ্তাই উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন: পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ

পদপ্রত্যাশী নেতাদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাপ্তাই উপজেলা শাখার সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দীর্ঘ ৭ বছর পর আগামী ২৮ অক্টোবর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে বলে জানান উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অংসুইছাইন চৌধুরী।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা হতে নির্বাচিত সাংসদ সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ সদস্য প্রকৌশলী থোয়াইচিং মং মারমা। এদিকে নেতাকর্মীদের আগ্রহ আসন্ন কাউন্সিলে কে হচ্ছেন দলের পরবর্তী সভাপতি এবং সম্পাদক। এ নিয়ে পদপ্রত্যাশী নেতাদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। তবে তৃণমূল পর্যায়ে আলাপকালে সবাই অভিমত ব্যক্ত করেছেন দলের দূর্দিন ও সুদিনে যারা কর্মীদের পাশে ছিলেন তাঁরাই যেন দলের মূল দায়িত্বে আসেন।

ইতিমধ্যে সভাপতি হিসাবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছেন তাঁরা হলেন বর্তমান কমিটির সভাপতি অংসুইছাইন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী থোয়াইচিং মং মারমা। আর সাধারণ সম্পাদক হিসাবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাঁরা হলেন ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্তার হোসেন মিলন।

এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বর্তমান সভাপতি অংসুইছাইন চৌধুরী এই প্রতিবেদককে জানান, সেই ছাত্র রাজনীতি হতে দলের দূর্দিন ও সুদিনে আমি সবসময় নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। জেলা পরিষদের সদস্য এবং উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দল গঠনে সবসময় নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। তিনি জানান রাঙামাটি থেকে নির্বাচিত সাংসদ জননেতা দীপংকর তালুকদার এবং তৃণমূল এর নেতাকর্মীরা যদি চায় তাহলে আমি আবারও সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী থোয়াইচিং মং মারমা এই প্রতিবেদককে জানান, আমি সবসময় জনগণ এর রাজনীতি করে আসছি, দলের নেতাকর্মীদের পাশে আমি ছিলাম তাদের সুখে দু: খে। তিনি জানান জননেতা দীপংকর তালুকদার আমাকে জেলা পরিষদের সদস্য করেছেন। তাঁর বিনিময়ে আমি সবসময় দলের প্রয়োজনে উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নের উন্নয়নে কাজ করে গেছি। আগামীতে যদি জননেতা দীপংকর তালুকদার এমপি এবং তৃনমূল নেতাকর্মীরা চান তাহলে আমি দলের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে আ’লীগকে আরোও সুসংগঠিত করতে চাই।

এদিকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী জানান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দিয়ে আমার রাজনীতি জীবনের শুরু। পর্যায়ক্রমে কাপ্তাই উপজেলায় যুবলীগকে সুসংগঠিত করে আমি আওয়ামী লীগের কমিটিতে নিজের যোগ্যতায় স্থান করে নিয়েছে।

তিনি জানান, সুদীর্ঘ এই রাজনৈতিক জীবনে তিনি বিরোধীদলে থাকাকালীন সময়ে তদানীন্তন সরকারি দলের নেতাকর্মী এবং পুলিশ এর কাছ থেকে হয়রানি হয়েছি, কিন্ত দলের আদর্শ হতে কখনোও পিছপা হই নাই। তাই দল এবং নেতাকর্মীরা যদি মনে করে আমি সাধারণ সম্পাদক হিসাবে যোগ্য তাদের সম্মানকে মাথা পেতে নিবো। দলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসাবে জোরেশোরে যার নাম শুনা যাচ্ছে তিনি হলেন বর্তমান কমিটির সদস্য আখতার হোসেন মিলন।

এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ১৯৯৮-৯৯ সালে আমি কর্নফুলি কলেজের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি,২০০২-২০০৫ সাল পর্যন্ত সেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক এর দায়িত্ব পালন করেছি এবং পরবর্তীতে যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী হিসাবে বর্তমান সভাপতি নাছির উদ্দিন কাছে হেরে গিয়েছি। ২০১২ সাল হতে অদ্যাবধি আ’লীগের সদস্য হিসাবে দলের সুখে দুখে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে তখনকার সভাপতি অনিল তনচংগ্যাসহ আমি কারাবরণ করেছি, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। আগামী দলের কাউন্সিলে যদি তৃনমূল নেতাকর্মীরা আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে মনোনিত করে আমি নিষ্টা ও দক্ষতার সাথে সেই দায়িত্ব পালন করবো।এছাড়া কামরুল ইসলাম,নরুউল্লা ভুইয়াসহ আরো অনেক প্রার্থী উপজেলা আ,লীগের সভাপতি/সম্পাদক পদে লড়বে বলে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

দীর্ঘ ৭ বছর পর কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে গত ৪ অক্টোবর চিৎমরম ইউনিয়ন এর সম্মেলন শেষ করা হয়েছে, আগামী সম্মেলন এর আগে বাকী ৪ টি ইউনিয়ন এর সম্মেলন শেষে আগামী ২৮ অক্টোবর উপজেলা সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে বলে দলের নীতিনির্ধারকরা জানান।

উপজেলা থেকে ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের উৎসাহ উদ্দীপনায় প্রমাণ করে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়া দেশের বৃহত্তম এই দলটির যেকোন পদে আসীন হওয়া মানে সম্মানের এবং গৌরবের।

Exit mobile version