parbattanews

৮৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নামবে টাইগাররা

ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনটা ছিল বাংলাদেশের। তাইজুলের ৩ উইকেট শিকারে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে পেরেছিল। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে বিরাট কোহলির উইকেট নিয়ে ভারতকে আরও চেপে ধরেছিল। তার পর বাজে ফিল্ডিংয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে দ্বিতীয় সেশনের। পান্ত-আইয়ারের যে জুটিটি প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সেটি ভাঙার সুযোগ হাতছাড়া করায় লিড নেওয়ার কাছে চলে গেছে সফরকারী দল। চায়ের বিরতিতে যাওয়ার আগে ভারতের প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ২২৬ রান। ক্রিজে আছেন আইয়ার (৫৮*) ও ঋষভ পান্ত (৮৬*)।

পঞ্চম উইকেটে প্রবল প্রতিরোধ গড়া জুটিটি ১৩২ রানে অবিচ্ছিন্ন থেকে দ্বিতীয় সেশন শেষ করেছে।

অথচ ৪৪তম ওভারে শ্রেয়াস আইয়ারের উইকেটটি পেতে পারতেন তাসকিন। তার বাড়তি বাউন্সে ভারতীয় ব্যাটার পুশ করেছিলেন। গালিতে বাতাসে ভাসানো বলটি লাফ দিয়ে হাতেও নিয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু হাতে রাখতে না পারায় সেই ক্যাচ পড়ে যায় মাটিতে। অবশ্য ভারসাম্য রাখতে না পেরে মিরাজ মুখ বরাবর মাটিতে পড়ে নাকে আঘাতও পেয়েছেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তখন এই অফস্পিনারকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে।

আইয়ারকে ৪৯ তম ওভারেও স্টাম্পড করার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন নুরুল হাসান সোহান। সাকিবের ভাসানো বলে এগিয়ে এসেছিলেন। বলের ফ্লাইট মিস করে বল পেছনে গেলেও সোহান বল গ্লাভসে জমাতে পারেননি। তখন ২১ রানে জীবন পান ভারতের এই ব্যাটার। তাতে দ্বিতীয় সেশনে স্বাগতিকদের সাফল্য বলতে একটি উইকেট।

অথচ দ্বিতীয় দিনের প্রায় দুই সেশনে নিজেদের আধিপত্য ছিল স্বাগতিকদের। প্রথম সেশনে তাইজুলের তিন উইকেট শিকারের পর লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরেই সাফল্যের দেখা পান তাসকিন।

প্রথম ওভার করতে এসেই বিরাট কোহলিকে বিদায় দিয়েছেন। যা আবার এই পেসারের ঘরের মাঠে প্রথম টেস্ট। তাসকিন অফস্ট্যাম্পের পাশে গা ঘেঁষা ডেলিভারি করেছিলেন। দারুণ সিম আপ ডেলিভারিতে হালকা বাউন্সও ছিল। বিরাট কোহলি ব‌্যাট ঠিকমতো সরাতেও পারেননি। তার আগেই ব‌্যাটে চুমু পেয়ে বল চলে যায় সোহানের গ্লাভসে। তাতে ৭৩ বলে ২৪ রানে ফিরেছেন কোহলি।

বিরাট কোহলিকে লাঞ্চের আগেও ফেরানো যেত! তবে কঠিন ছিল সেই ক্যাচ। মেহেদী হাসান মিরাজের নিচু হওয়া বল ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল ব্যাটে লেগে পেছনে দাঁড়ানো উইকেট কিপার নুরুল হাসান সোহানের প্যাডে লাগে। জীবন পান কোহলি। তখন তিনি ১৮ রান নিয়ে ব্যাট করছিলেন।

বৃহস্পতিবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিনের পুরোটা সময় অস্বস্তি নিয়ে কাটিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটিং ব্যর্থতার জেরে ২২৭ রান সংগ্রহ করতে পারে। মুমিনুল ছাড়া কোনও ব্যাটারই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। বাংলাদেশকে অলআউট করে বৃহস্পতিবার শেষ বিকালে ৮ ওভার ব্যাটিং করে সফরকারীরা। ৮ ওভারে বিনা উইকেটে তুলতে পারে ১৯ রান। সেই জুটিটা দ্বিতীয় দিন প্রায় ২০ মিনিটের মতো অবিচ্ছিন্ন থাকতে পারে।

লোকেশ রাহুলকে এলবিডাব্লিউ করে শুরুর এই জুটি ভেঙেছেন তাইজুল। উইকেট থেকে কিছুটা বেরিয়ে এসে রাহুল ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল ব্যাটে লাগার আগে আঘাত করে প্যাডে। জোরালো আবেদন হলেও আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। যদিও রিভিউ নিয়ে শেষ পর্যন্ত রাহুলকে সাজঘরের পথ দেখাতে পেরেছেন তাইজুল। তাতেই ভাঙে ২৭ রানের ওপেনিং জুটি। রাহুল ৪৫ বলে ১ চারে ১০ রান করে আউট হয়েছেন।

নিজের পরের ওভারের প্রথম বলে ফের সাফল্য পান তাইজুল। লেগ-মিডল স্টাম্পে পিচ করে সোজা যাওয়া বলে ভারতীয় ওপেনার শুভমান গিল সুইপ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বলে-ব্যাটে ঠিক মতো সংযোগ ঘটাতে পারেননি। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর চেতেশ্বর পূজারার সঙ্গে কথা বলে রিভিউ না নিয়ে ফিরে যান এই ওপেনার। চট্টগ্রাম টেস্টে সেঞ্চুরি করা শুভমান ঢাকায় ১ ছক্কা ও ১ চারে ২০ রানের ইনিংস খেলে ফিরেছেন।

৩৮ রানে দুই উইকেট হারানোর পর বিরাট কোহলি ও চেতেশ্বর পূজারার জুটিতেই তার পর এগিয়ে যেতে থাকে ভারত। ১১ রানের ব্যবধানে দুই ওপেনারকে ফেরানোর পর তৃতীয় উইকেটে হওয়া ৩৪ রানের এই জুটি ভেঙে প্রথম সেশনটা নিজেদের করে নিতে অবদান রাখেন তাইজুল।

পূজারা লেগ স্টাম্পে পিচ করা বল লেগ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শর্ট লেগে দাঁড়ানো ফিল্ডার মুমিনুল হক দারুণ রিফেক্সে ক্যাচ নিয়ে সাজঘরের পথ দেখান পূজারাকে। ৫৫ বলে ২ চারে ২৪ রানের ইনিংস খেলেছেন চট্টগ্রাম টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান।

Exit mobile version