parbattanews

রোহিঙ্গা সংকট: সু চি’র দাবিগুলো কতটা সঠিক?

 

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি শেষ পর্যন্ত কথা বলেছেন রাখাইনের সহিংসতা শরণার্থী সংকট নিয়ে, কিন্তু সেগুলো কতটা সঠিক

কিন্তু ভাষণে তিনি যেসব দাবি করেছেন তা কতটা সঠিক না বিশ্লেষণ করেছেন বিবিসি সংবাদদাতা জোনাথন হেড, যিনি মিয়ানমার ও বাংলাদেশে সরেজিমন পরিস্থিতি দেখেছেন।

অং সান সু চি বলেছেন, “৫ই সেপ্টেম্বরের পর থেকে সেখানে (রাখাইনে) কোন সহিংসতা নেই”।

জোনাথন হেড: ৭ই সেপ্টেম্বর সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি মিডিয়া দলের অংশ হিসেবে আলেল থান খিয়াও শহরে গিয়েছিলাম। সেখানে অটোমেটিক রাইফেলের গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিলো এবং বড় ধরনের চারটি ধোঁয়ার লাইন দেখতে পাচ্ছিলাম যা নিশ্চিত ইঙ্গিত দিচ্ছিলো যে গ্রামগুলো আগুনে পুড়ছে। ওইদিনেই পরের দিকে আমরা যাই রোহিঙ্গা গ্রাম গাউ দু থার ইয়া যেখানে সশস্ত্র পুলিশের সামনেই বৌদ্ধদের লাগানো আগুন তখনো জ্বলছিল। পরে বাংলাদেশ থেকেও আমি নাফ নদীর ওপারে আগুনের ধোয়া স্পষ্টই দেখতে পাই।

অং সান সু চি: “ধর্ম, বর্ণ বা রাজনৈতিক অবস্থান যাই হোক না কেন আইনের বাইরে গেলে বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে যে কারও বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে”।

জোনাথন হেড: বার্মার সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কিন্তু কখনোই কোন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মংগদুতে একজন সেনা কর্মকর্তা আমাকে বলেছেন যে ধর্ষণের অভিযোগগুলো সত্যি নয় কারণ তার সৈনিকরা ব্যস্ত আর রোহিঙ্গা নারীরা আকর্ষণীয় নয়।

অং সান সু চি: ” রাখাইনে সব মানুষের কোন বৈষম্য ছাড়াই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার অধিকার রয়েছে”।

জোনাথন হেড: এটা নির্জলা মিথ্যা। রোহিঙ্গারা বহু বছর ধরেই বৈষম্যের শিকার। এমনকি তাদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রিত। বিয়ে করতেও অনুমতি নিতে হয়, আবার সে অনুমতির জন্য ঘুষও দিতে হয়। ২০১২ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর থেকে তাদের ওপর বিধিনিষেধ আরও জোরদার করা হয়। অনেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে মিয়ানমারের মধ্যেই ক্যাম্পে অবস্থান করে। আমি জানি ক্যাম্পের শিশুগুলো পড়ালেখা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো পাঁচ বছরের জন্য। চার বছর আগে আমি একটি রোহিঙ্গা গ্রামে গিয়েছিলাম বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সহিংস আচরণের জন্য রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা নিতে যাওয়াও অসম্ভব ছিলো।

জোনাথন হেড বলেন গত সোমবারই বাংলাদেশে তার সাথে দেখা হয় মোহাম্মদ আব্দুল মজিদের। সে এসেছে গাউ দু থার ইয়া গ্রাম থেকে যেটিকে তিনি পুড়তে দেখেছেন ৭ই সেপ্টেম্বর।

আব্দুল মজিদ তাকে জানান যে গত পাঁচ বছর তারা কাজের জন্য গ্রামের বাইরে যেতে পারেননি।

সূত্র: বিবিসি

Exit mobile version