রুমা বাজারে শারদীয় দুর্গোৎসবেও নেই বেচাকেনার আমেজ


আগামীকাল ২৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকাল থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। তবে বান্দরবানের রুমা বাজারে নেই উৎসবকে ঘিরে বেচাকেনার কোনো আমেজ।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিশেষ করে কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের সমাগম একেবারেই নেই। দোকান মালিক ও কর্মচারীরা অলস সময় পার করছেন।
২৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সকালে রুমা বাজারে কাপড় ব্যবসায়ী মো. মোর্শেদ (৪৫) ও ওসমান বলেন, ‘দুর্গোৎসব আসন্ন হলেও দোকানে ক্রেতা আসে না, বেচাকেনা না হলে চলব কেমন করে?’
মা স্টোরের স্বত্বাধিকারী মিটু দাশ জানান, ‘শাড়ি কিংবা থামিং-লুঙ্গি কিছুই বিক্রি হচ্ছে না। ক্রমাগত ঋণ বেড়ে যাওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।’
কাপড় ব্যবসায়ী সাধন বড়ুয়া বলেন, ‘গত বছর এই সময় দোকানে এত ভিড় ছিল যে, ভাগিনা আর স্ত্রীকেও সহযোগিতা করতে হয়েছে। এখন দোকানে আমি একাই বসে আছি, ক্রেতা নেই। ব্যবসা চালাতে গিয়ে চার থেকে ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ হয়ে গেছে।’
তিনি আরও জানান, ‘দুর্গোৎসবে বিক্রি না হলেও সামনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমাদের বৃহস্পতি ও সোমবারের বাজারকে ঘিরে আশায় আছেন।’
তবে কিছুটা স্বস্তির কথা জানিয়েছেন ইত্যাদি স্টোরের ম্যানেজার খোকন। তিনি বলেন, ‘সকাল ১০টা আর বিকাল ৩টার পর মোটামুটি বেচাকেনা হয়। বিশেষ করে ৩০ বছরের বেশি বয়সী নারীরা জর্জেট, লিলেন, পপলিন কাপড় ও শাড়ি বেশি কিনছেন।’
শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি রাজিব দাশ জানান, ‘আগামীকাল শনিবার থেকে রুমায় জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে টানা তিন দিনের নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।’
সপ্নারাণী (৪২) জানান, ‘স্বামীর এখন কোনো ব্যবসা নেই। আয় রোজগার নাই। নিজের জন্য কিছু না কিনে শুধু মেয়ের জন্য জামা কাপড় কিনেছেন তিনি।’
রুমা বাজার সংলগ্নে লেমুঝিরি পাড়ার বাসিন্দা সুভাষ সরকার জানান, ‘পরিবার সদস্যের চারজনের মধ্যে নিজে এবং তার স্ত্রীর জন্য দুর্গাপূজা উপলক্ষে কেনাকাটা কিছুই করেননি। ব্যবসা-বাণিজ্য না থাকায় ঘরের ছেলে ও মেয়েদের কেনা-কাটা করেননি বলে উল্লেখ করেন তিনি।’
উল্লেখ্য, শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব আর আগামী ৬ অক্টোবর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা বা ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে পালিত হবে।
হিন্দু ও বৌদ্ধ দুই ধর্মাবলম্বী ও সম্প্রদায়ের দুইটি উৎসবকে কেন্দ্র করে চলছে উৎসবের আমেজ। একই সাথে রয়েছে বেশ কয়েকদিন সরকারি ছুটিও। তাই পর্যটকের আগমনের আশায় প্রস্তুতিতে সরব রয়েছেন টুরিস্ট গাইডরাও।