উখিয়ায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট, ক্রেতাদের চাহিদা মাঝারি সাইজের গরু

fec-image

পবিত্র ঈদুল আযহার দিন যত ঘণিয়ে আসছে, জমিয়ে উঠছে কোরবানির পশুর হাট। উখিয়ার সর্ববৃহৎ গরু বাজারে এবার মিয়ানমার ও ভারতের গরুর চেয়ে দেশীয় গৃহপালিত গরুর সংখ্যা বেশি। ধর্মভিরু মুসলিম সম্প্রদায়ের কোরবানিতে পছন্দ এ সব দেশীয় গরুর। দাম অনেক চড়া হলেও থেমে নেই বেচাকেনা।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) থেকে মিয়ানমারের পশু আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসক। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে গরু বাজারে কঠোর নিরাপত্তা। ছিনতাই, ডাকাতিসহ যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।

উখিয়ার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কোরবানির পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, দুপুর পর্যন্ত ক্রেতার সংখ্যা কম থাকলেও বিকেলের দিকে বেড়েছে ক্রেতার সংখ্যা। যেসব ক্রেতারা এসেছে তারা গরুর দাম বেশি হলেও বেচাকেনা চলছে দেদারছে। কিন্তু বড় আকারের গরুর তুলনায় বাজারে অধিকাংশ ক্রেতাদের পছন্দ দেশীয় গৃহপালিত মাঝারি আকারের গরু।

নুরু মিয়া (৩৭) নামের এক ব্যক্তি ২টি মাঝারি সাইজের গরু এনেছেন বাজারে। ২টি গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার বাড়ি উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পূর্বডিগলিয়াপালং গ্রামে। তিনি জানান, গরু ২টি রমযানের পরে সপ্তাহে ক্রয় করেছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকায়। তিনি ১০ হাজার টাকা গরুর খাদ্য, ওষুধ বাবদ ব্যয় করেছে। একই কথা চাকৈবঠা এলাকার ছৈয়দ নুর (৪০)। এই সাইজের গরুর চাহিদা বেশি দাম ছেড়ে দিচ্ছেনা।

মিয়ানমার থেকে গত ১ সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজারে অধিক গরু নাফ নদী পাড়ি দিয়ে নৌকায় করে এপারে এসেছে। এসব গরু গুলো স্থানীয় বাজারে প্রভাব ফেলেছে। কোরবান পর্যন্ত স্থানীয় খামারিদের উৎপাদিত গরু ও মহিষের বাজার দর ধরে রাখতে (মঙ্গলবার ৬ আগস্ট) হতে মিয়ানমার থেকে সকল প্রকার গবাদি পশু আমদানি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত গবাদিপশুর দরপতনের আশংকায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন।

তবে হঠাৎ করে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমন্তের ওপারে আমদানির জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এপারে আনার জন্য মজুদ করে রাখা গবাদি পশু নিয়েও আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা চরম সংকটে পড়েছেন বলে টেকনাফের ক’জন আমদানিকারক জানিয়েছেন।

এছাড়া মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি মঙ্গলবার থেকে বন্ধ থাকার ঘোষণায় স্থানীয় গবাদি পশুর বাজারেও তার বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৃহত্তর কক্সবাজারসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর বাজারমূল্য আবারও ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।

উখিয়া উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ সাহাব উদ্দিন বলেন, উখিয়া প্রতি বছর কোরবানির গরুর চাহিদা থাকে ১১ থেকে ১২ হাজার। কিন্তু এবার স্থানীয় ভাবে ১৭ হাজার গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। এতে স্থানীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে গরু বিক্রয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে বিভিন্ন দাতা সংস্থার নিকট এ সব গরু স্থানীয় ভাবে বিক্রির ও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রাণি সম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে পশুর হাট মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, প্রতি কোরবানির ঈদের ন্যায় গরু বাজারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে যাতে কোন প্রকার ছিনতাই, ডাকাতিসহ যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতারা নিরাপদ থাকে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন