বাংলাদেশের মাটিতে মিলল বিরল সম্পদ

fec-image

উপরে-উপরে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে চলছে বাণিজ্য যুদ্ধ। তবে তলে তলে তাদের নীরব কিন্তু তীব্র লড়াই চলছে অন্য এক বিষয় নিয়ে- রেয়ার আর্থ মিনারেলস অর্থাৎ বিরল মৃত্তিকা খনিজ পদার্থ। স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়ি- বর্তমান সময়ে প্রায় সব কিছু তৈরির জন্যই অপরিহার্য এই খনিজ পদার্থ। বর্তমানে গোটা বিশ্বের বিরল মৃত্তিকা খনিজের ৭০ শতাংশই সরবরাহ করে চিন। এমনকী, অ্যাপল সংস্থাকেও আইফোন তৈরির জন্য এই খনিজ আমদানির জন্য চিনের উপরই নির্ভর করতে হয়।

দুই বিশ্বশক্তির মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনা এবং শুল্ক যুদ্ধের মধ্যে, চিন থেকে বিরল মৃত্তিকা খণিজ সরবরাহের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি এই বিষয়ে চিন-নির্ভরতা কমাতে ইউক্রেনের মুখাপেক্ষী হতে দেখা গিয়েছে ওয়াশিংটনকে। এর পর কি তাদের নজর পড়বে বাংলাদেশে?

বলা যেতে পারে, লটারি জিতে নিয়েছে মুহাম্মদ ইউনূসের দেশ। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিরল মৃত্তিকা খনিজ পদার্থ আবিষ্কারের দাবি করেছেন সেই দেশের গবেষকরা। তাদের মতে, বাংলাদেশের নদীর অববাহিকার বালির চরে, উপকূলীয় সৈকতের বালিতে এবং কয়লা খনিতেও এই মূল্যবান খনিজ পদার্থ পাওয়া গিয়েছে। এই আবিষ্কারের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এই খণিজ যদি বাণিজ্যিক ভাবে খননযোগ্য হয়, তা হলে এই আবিষ্কার বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য নতুন দরজা খুলে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

যদি এই সম্পদগুলি বাণিজ্যিকভাবে খনির জন্য কার্যকর হয়ে ওঠে, তাহলে বাংলাদেশ হঠাৎ করেই বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসতে পারে। শিগগিরই আমেরিকা এবং চিনকে ইউনূসের দরজায় কড়া নাড়তে দেখা যেতে পারে। ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

বিংশ শতাব্দীতে তেলের জোরে ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় উঠে এসেছিল আরব দেশগুলি। বিশেষজ্ঞদের মতে, একবিংশ শতাব্দীতে তেলের জায়গাটা নিতে পারে বিরল মৃত্তিকা খনিজ। যাদের হাতে এই খনিজ বেশি থাকবে, তাদের হাতে বিশ্ব শাসনের চাবিকাঠি থাকবে। আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমী শক্তিগুলি যখন এই ক্ষেত্রে চিনের একচেটিয়া আধিপত্য ভাঙার চেষ্টা করছে, তখন অপ্রত্যাশিত ভাবে এই বিশ্ব জুড়ে টানাপড়েনের সবচেয়ে আলোচিত নামগুলির মধ্যে চলে আসতে পারে বাংলাদেশও।

আগেই বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের মোট বিরল মৃত্তিকা খণিজের ৭০ শতাংশেরও বেশি উৎপাদন করে চিন। বিকল্প হিসেবে রয়েছে ভিয়েতনাম এবং অস্ট্রেলিয়া। এই দুই দেশেও বহু বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। বাংলাদেশও এই তালিকায় যোগ দিতে পারে।
সূত্র : এই সময় অনলাইন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন