মাদক চক্রের হাতে যেভাবে খুন হন ঢাবি ছাত্র সাম্য

fec-image

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এস এম শাহরিয়ার আলম সাম্য ও তাঁর দুই বন্ধু ১৩ মে রাত পৌনে ১২টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যান। সেখানকার একটি মাদক কারবারি চক্রের সদস্য মো. রাব্বি ওরফে কবুতর রাব্বির হাতে ছিল একটি ট্রেজার গান (ইলেক্ট্রিক শক দেওয়ার যন্ত্র)।

কৌতূহলবশে সেটি দেখতে চান সাম্য। তবে কবুতর রাব্বি দেখাতে রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা গড়ায় হাতাহাতিতে। একপর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করেন রাব্বী।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ সময় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযানে জড়িত আটজন গ্রেপ্তারের পর সাম্য হত্যার নেপথ্যের কাহিনী বেরিয়ে আসে।

গ্রেপ্তাররা হলেন– মো. রাব্বি, মেহেদী হাসান, নাহিদ হাসান পাপেল, মো. রিপন, মো. সোহাগ, মো. রবিন, হৃদয় ইসলাম ও সুজন সরকার। ডিবির একাধিক দল গত কয়েকদিনে কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

হত্যায় ব্যবহৃত দুটি সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে ঘটনার রাতেই শাহবাগ থানা পুলিশ হত্যায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন– তামিম হাওলাদার, সম্রাট মল্লিক ও পলাশ সরদার।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনেক ফুডকোর্ট ছিল। সেখানে অনেক রাত পর্যন্ত খাবার পাওয়া যেত।

আমরা জানতে পেরেছি, সাম্য ও তাঁর দুই সহপাঠী খাবারের জন্য সেখানে যান। তখন ট্রেজার গান নিয়ে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে অন্য মাদক কারবারিরাও এসে রাব্বীর সঙ্গে যোগ দেন।

তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনা ঘটে বলে এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পেরেছি। তবে এর নেপথ্যে আর কোনো ঘটনা বা অন্য কোনো বিষয় আছে কি না সেটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ডিবির এই কর্মকর্তা জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক কারবারিদের তিনটি দল আছে। একটি দল তিন নেতার মাজার এলাকায়, একটি উদ্যানের মাঝে, আরেকটি ছবির হাট ঘিরে সক্রিয়। এর মধ্যে একটি দলের নেতা মেহেদী হাসান।

গ্রেপ্তার অপর সাতজন তার দলের। মেহেদীই মূলত সুইস গিয়ার সাপ্লাই দেন। ঘটনার দিন তিনি একটি ব্যাগে করে সুইস গিয়ারগুলো আনেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে সহযোগীদের কাছে সরবরাহ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ১৩ মে রাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাত করা হয়। রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন