বান্দরবানে বাহিরে তালা ভিতরে জমজমাট ঈদ মার্কেট, সাংবাদিকের উপর হামলার চেষ্টা

fec-image

প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বান্দরবানে চলছে জমজমাট ঈদ বাজার। যেন এক চোর-পুলিশ খেলা । চৌধুরী মার্কেট সংলগ্ন হক হিল টাওয়ারে প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বান্দরবানের কতিপয় কিছু দোকানদার এ কার্যক্রম চালাচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৯ মে) সকালে বান্দরবানে সহকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে এবং জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিপণিবিতান খোলা রাখাই বালাঘাটা তিনটি দোকানকে ৭০০০ হাজার টাকা এবং বান্দরবান স্বপ্নপুরীকে ২০০০ টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়।

উল্লেখিত যে স্বপ্নপুরী‘সহ হক হিল টাওয়ারের কতিপয় কিছু দোকানদার স্বাস্থ্যবিধি ও জেলা প্রশাসকের নিষেধাজ্ঞা না মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছিল ।

দোকানদারগণ এজন্য বিশেষ একটি প্রক্রিয়া ব্যবহার করেছিল। যেকোনো ক্রেতা সাধারণকে ভিতরে ঢুকিয়ে বাহিরে তালা মেরে জমজমাটভাবে তারা ব্যবসা চালাচ্ছিল। ক্রেতা সাধারণ ভিতরে ঢুকে গেলে বাইরে তালা লাগিয়ে দেয় একজন কর্মচারী। যার ভিডিও চিত্র সাংবাদিকরা সকলে ধারণ করে।

সব দোকানেই এ ধরনের কার্যক্রম চালাচ্ছিল। বিষয়টি প্রশাসনের নজরদারিতে আসলে হাতেনাতে সত্যতা ও প্রমাণ পাওয়াতে স্বপ্নপুরীকে জরিমানা করে। তার কারণে স্বপ্নপুরী শপিং মালিকসহ কতিপয় কিছু দোকানদার আজ দুপুরে হক হিল টাওয়ারের সামনে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় লোকজন জড়ো করে সংবাদকর্মীদের দেখে হামলার চেষ্টা করে।

সংবাদকর্মীদের বড় দোষ তারা কেন প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছে সত্য প্রকাশ করে। দোকানদারদের কথা হলো সত্য প্রকাশ করা যাবে না এবং প্রশাসনকে বলা যাবে না। তাই তারা সংবাদকর্মীর ওপর এই আক্রমণ চালিয়েছে।

উল্লেখ্য যে আজ ১৯ মে সকালে জরিমানা করার পর দুপুরবেলা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় স্বপ্নপুরী শপিং এর মালিকসহ কিছু কতিপয় দোকানদার সংবাদকর্মীকে পিছন থেকে ডাক দিয়ে দাঁড় করায়। জানতে চাই কেন সত্য প্রকাশ করে ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানো হয়েছে।

স্বপ্নপুরীর মালিক বলেন, তোমরা সাংবাদিকদের কারণে আমাদের জরিমানা করেছে। তোমাদের কারণে আমরা ব্যবসা করতে পারছিনা। তোমরা সত্য প্রকাশ করছো বিদায় আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। এই সময় তার সাথে থাকা কিছু দোকানদার সংবাদকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। যা মুখ দিয়ে প্রকাশ করার মত নয়।

সাংবাদিক সত্য প্রকাশ করায় তাকে মারার চেষ্টা চালিয়েছে লোকজন জড়ো করে। দুনিয়াতে এমন পরিস্থিতি হলে সত্য প্রকাশ করা যাবে না। প্রশাসনকে কেন সহায়তা করেছে তার জন্য হামলার শিকার হয়েছে সাংবাদিক।

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসককে জানালে জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম জানান, ব্যবসায়ীরা জেলা প্রশাসনের আইন ভঙ্গ করে ও নিয়মনীতি অনুসরণ না স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করায় প্রথমত অপরাধ করেছে । জনগণের নিরাপত্তার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে কিন্তু এই নিউজ কাভার করাতে সাংবাদিকের উপর যারা আক্রমণের চেষ্টা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পুলিশ সুপার জেরিন আক্তারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি। নিউজ সংগ্রহ করাতে সংবাদকর্মীদের উপর যে ব্যবসায়ীরা এ ধরনের আক্রমণের চেষ্টা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি আমরা নজরদারিতে রয়েছে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন মজুমদার এর সাথে মুঠোফোনে বিষয়টি জানানো হলে তিনি এর তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন এবং তিনি বলেন সাংবাদিকের কর্তব্য সত্য তুলে ধরা, সত্য প্রকাশ করে সাংবাদিকগণ প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছে , কিন্তু যারা এই সত্য প্রকাশ করায় সাংবাদিকের উপর হামলার চেষ্টা করেছে তারা এতে অন্যায় করেছে। ভবিষ্যতে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে।

বর্তমানে দেশের অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়াতে প্রশাসন চেষ্টা করছে জনগণকে সচেতন করে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত করার জন্য। এ জন্য প্রশাসন দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু দোকানদার প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে নিজের মত করে ব্যবসা চালাচ্ছে যা নিজের এবং সমাজের জন্য, এবং বান্দরবান বাসির জন্য বিশাল এক হুমকিস্বরূপ।

তাই করোনাভাইরাস থেকে সকল বান্দরবানবাসীকে সচেতন করে নিরাপদ রাখার জন্য প্রশাসনের কাছে এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সকল সচেতন মহল বান্দরবানবাসী ও সাংবাদিকগণ জোর দাবি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস, পুলিশ, বান্দরবান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন