এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা ও বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতি
এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আবশ্যিক বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে না। আবশ্যিক বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত, আইসিটি ও ধর্ম। এর বাইরে মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নৈর্বাচনিক যেসব বিষয় রয়েছে সেগুলোর গ্রুপভিত্তিক তিনটি বিষয়ের (ছয় পত্রে) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া চতুর্থ বিষয়েরও পরীক্ষা নেওয়া হবে না।
আবশ্যিক বিষয় বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত, আইসিটি ও ধর্ম বিষয়ে পরীক্ষার্থীদের আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেওয়া হবে। পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হলে তিন বিষয়ের পরীক্ষার নম্বর এবং আবশ্যিক সাবজেক্ট ম্যাপিং করে তার নম্বর একসঙ্গে যুক্ত করে ফল প্রকাশ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির প্রেস ব্রিফিং এবং মন্ত্রণালয়ের তথ্যে এই চিত্র উঠে আসে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবার ২০২১ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের ৬০ দিনের এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে শ্রেণি কার্যক্রম শেষ করে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের ওপর অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিখন ফল অর্জনের বিষয়ে পরীক্ষাকল্প নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এসএসসি ও সমমান পর্যায়ের অ্যাসাইনমেন্ট আগামী ১৮ জুলাই থেকে শুরু হবে এবং ১২ সপ্তাহে মোট ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। তিনটি নৈর্ব্যক্তিক বিষয়ে (ছয়টি পত্রে) প্রতিটি পত্রে মোট ৫টি করে ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে।
এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া শুরু হবে আগামী ২৬ জুলাই থেকে এবং ১৫ সপ্তাহে মোট ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের (ছয়টি পত্রে) প্রতিটি পত্রে মোট ৫টি করে ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের আবশ্যিক ও চতুর্থ বিষয়ের কোনও অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এসএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষায় আবশ্যিক বিষয়গুলো (যেমন বাংলা, ইংরেজি, আইসিটি ও ধর্ম) অধ্যয়ন করেছে। বিষয়গুলো জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষায় মূল্যায়ন করা হয়েছে। এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় আবশ্যিক বিষয়গুলো যেমন বাংলা, ইংরেজি, গণিত, আইসিটি ও ধর্ম বিষয়গুলো অধ্যয়ন করেছে। এই বিষয়গুলো এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মূল্যায়ন করা হয়েছে। এসএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক বিষয়গুলো ইতোপূর্বে (জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষায়) শিক্ষা বোর্ডগুলো পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করেনি। সে কারণে এই বিষয়গুলো মূল্যায়ন করা আবশ্যক। এছাড়া আবশ্যিক বিষয়গুলোর নম্বর জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষায় সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এসএসসি ও সমমান পর্যায়ে নম্বর দেওয়া সম্ভব। একইভাবে এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক বিষয়গুলো ইতোপূর্বে (এসএসসি/সমমান পরীক্ষায়) শিক্ষা বোর্ডগুলো পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করেনি। সে কারণে এই বিষয়গুলো মূল্যায়ন করা আবশ্যক। এছাড়া আবশ্যিক বিষয়গুলোর নম্বর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ে নম্বর দেওয়া সম্ভব। এছাড়া উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রে গ্রুপভিত্তিক বিষয়গুলোর মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সে কারণে গ্রুপভিত্তিক বিষয়গুলোর মূল্যায়ন জরুরি। ‘
শিক্ষামন্ত্রী জানান, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি অনুকূল হলে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের ওপর পরীক্ষার সময় ও নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এ বছরের নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। আর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।
পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে বিকল্প মূল্যায়ন
কোভিড-১৯ পরিস্থিতির সার্বিক বিবেচনায় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর আগের জেএসসি/জেডিসি/এসএসসি/সমমান পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে এসএসসি ও এইচএসসি সমমান পরীক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে।
এইচএসসির ফরম পূরণ
আসন্ন ঈদুল আযহার পর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে অনলাইনে।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন