রামুতে বাড়ি ভেঙ্গে লুট: থানায় অভিযোগ করায় গৃহবধূকে কুপিয়ে জখম

fec-image

কক্সবাজারের রামুতে বসত বাড়ি ভাঙচুর করে পুরো বাড়িসহ মালামাল লুট এবং গৃহবধূকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের লট উখিয়ারঘোনা গ্রামের আকতার কামালের ছেলে মো. আলম তাহেরের বাড়িতে এ হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হামলাকারীরা আলম তাহেরের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৩০) কে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রামু থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ ঘটনায় গুরুতর আহত মনোয়ারা বেগমের স্বামী মো. আলম তাহের এ ঘটনায় রামু থানায় লিখিত এজাহার দিয়েছেন। লিখিত এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গৃহকর্তা আলম তাহের কাঠ মিস্ত্রি কাজ করেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগেরদিন তিনি কাজে ব্যস্ত এবং স্ত্রী-সন্তানরা বিকালে কেনাকাটা করতে যান। এ সুযোগে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে একই এলাকার আকতার কামালের ছেলে আবদু শুক্কুর, হাফেজ আহমদের ছেলে মাহাবুবুল আলম, আজিজুর রহমানের স্ত্রী শাকেরা বেগম ও মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে আরফাত উল্লাহর নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় আলম তাহেরের বাড়িটি পুরোপুরি গুড়িয়ে দেয়। এরপর গুড়িয়ে দেয়া বাড়ির বেড়া-ছাউনির টিন, আরসিসি খুঁটি, বাড়ির ভেতরে থাকা ৩ ভরি স্বর্ণের অলংকার, স্টিল আলমিরা, অন্যান্য আসবাবপত্র, গ্যাসের চুলাসহ সব মালামাল পিকআপযোগে লুট করে নিয়ে যায়।

গৃহকর্তা আলম তাহের জানান, খবর পেয়ে তারা বাড়িতে গিয়ে ভাংচুর-লুটপাটের দৃশ্য দেখে ৯৯৯ এ কল করলে রামু থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। পরে থানায় লিখিত এজাহার দিলে গত শনিবার, ১৩ এপ্রিল রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ ইয়াছিন ঘটনাস্থলে বিষয়টি তদন্তে যান। তদন্ত শেষে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সাথে সাথে বসত বাড়ি লুটপাটে জড়িত আবদু শুক্কুর, মাহাবুবুল আলম, শাকেরা বেগম ও আরফাত উল্লাহর নেতৃত্বে তাদের আরও কয়েক সহযোগী থানায় অভিযোগ দেয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তার (আলম তাহের) স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে দা দিয়ে মাথা ও শরীরের একাধিক অংশ কূপ দেয়। স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় মনোয়ারা বেগমকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে প্রেরণ করেন।

এ ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ ইয়াছিন, বসতঘর ভাঙচুর, লুটপাট এবং গৃহবধূকে কুপিয়ে জখম করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন- এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জড়িতদের আটকের চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িতরা পলাতক রয়েছে। তাদের মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়রা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগেরদিন বসতঘর ভেঙ্গে লুট ও পরে গৃহবধূকে কুপিয়ে জখমের বিষয়টি দুঃখজনক। এ ঘটনায় জড়িতরা সবাই এলাকার চিহ্নিত অপরাধী ও মাদক চক্রের সাথে সম্পৃক্ত। তারা দীর্ঘদিন এলাকায় নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে সক্রিয় রয়েছে। তাদের অপকর্মে পুরো এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। এলাকাবাসী এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন