সীমান্তে চলমান উত্তেজনা নিয়ে বিজিবি-বিজিপির পতাকা বৈঠক রবিবার

fec-image

সীমান্তে চলমান উত্তেজনা নিরসনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক রবিবার (৩০ অক্টোবর) কক্সবাজার টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

বৈঠকে উভয় দেশের ১০ জন করে প্রতিনিধি অংশ গ্রহণ করবেন। সকাল ১০টায় এ বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। দীর্ঘ আড়াই মাস সীমান্তে উত্তেজনার পর অবশেষে মিয়ানমার বৈঠকের সাড়া দিলো।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত আগস্ট মাসে উখিয়া উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত বরাবর মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে দুটি মর্টারশেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ে। তবে বিস্ফোরিত না হওয়ায় কেউ হতাহত হয়নি। এর পরের দিন মিয়ানমারের যুদ্ধ বিমান থেকে ছোড়া আরো দুটি মর্টারশেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ে। এতে সীমান্তে বসবাসরত বাসিন্দাদের মাঝে বাড়ে আতঙ্ক। এভাবে ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের মাটিতে পড়ে আরো কয়েকটি মর্টারশেল। যা বিস্ফোণ হয়ে এক রোহিঙ্গা মারা যায় এবং আহত হয় ৬ জন। যার ফলে সীমান্তে বসবাসরত অনেকে আতঙ্কিত হয়ে এলাকা ছেড়ে আশ্রয়ে চলে যান দূরে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে।

এমন পরিস্থিতিতে ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কয়েক দফা কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ সরকার। তবুও সীমান্তের পরিস্থিতি একই রকমের রয়ে যায়। পর্যায়ক্রমে উখিয়ার পালংখালী সীমান্ত হয়ে টেকনাফ সীমান্ত পর্যন্ত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলতে থাকে গোলাগুলি ও গোলা বর্ষণ। এতে আরো আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সীমান্তে বসবাসরত বাংলাদেশি বাসিন্দারা। এ অবস্থায় ১০ অক্টোবর সীমান্ত পরিস্থিতি দেখতে পরিদর্শনে যান বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ।

সীমান্ত পরিদর্শনের পাশাপাশি দেখেন বিজিবি সদস্যদের কার্যক্রম। ওই সময় সাংবাদিকদের তিনি জানান, প্রতিবাদলিপি পাঠানোর পাশাপাশি বিজিপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা চালান। সময় নির্ধারণ না হলেও পতাকা বৈঠকের সম্মতি জ্ঞাপন করেন বিজিপি। চলতি মাসের ২৩ তারিখ সর্বশেষ মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলির শব্দ শুনা গেলেও ধীরে ধীরে কমে যায়। এরপর থেকে আর শোনা যায়নি। চলমান সংঘাতে সীমান্তে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে অবশেষে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে বৈঠকে রাজি হলো মিয়ানমার বিজিপি।

এর প্রেক্ষিতে রবিরার (৩০ নভেম্বর) সকাল ১০টায় টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নে কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এতে উভয় দেশের ১০ জন করে প্রতিনিধি অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মো. ইফতেখার।

তিনি আরো জানান, সীমান্তে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি রয়েছে সে সম্বন্ধে আলোচনার পাশাপাশি উভয় দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

ইতিমধ্যে বৈঠকের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। গত প্রায় ৩ মাস ধরে মিয়ানমার অভ্যন্তরে চলমান গোলাগুলিকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এতে বাংলাদেশ সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। সীমান্তের এ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ চলছিল। সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বিজিবি কড়া নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।

সীমান্তে গুলাগুলির ঘটনায় স্থানীয়রা জানান, সীমান্তে অপ্রীতিকর ঘটনা আন্তর্জাতিক আইন অমান্যের বিষয়টি তুলে ধরে আতঙ্কের বিষয়টি নিরসনের প্রত্যাশা সীমান্তবাসীর।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন