চকরিয়ায় অস্ত্রসহ ৫ ডাকাত গ্রেপ্তার


কক্সবাজারের চকরিয়া-লামা সড়কে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে গহিন জঙ্গল থেকে ৫ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় ডাকাতদের দেওয়া স্বীকারোক্তি ও তথ্যমতে অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। চকরিয়া থানার ওসি তৌহিদুল আনোয়ার ডাকাত গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চকরিয়া-লামা এ সড়কটা দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠে। বিশেষ করে ফাঁসিয়াখালী রিংভং ফরেস্ট বিট থেকে কুমারী ব্রিজ পর্যন্ত বনাঞ্চলটি ভ্রমণকারীদের জন্য আতঙ্কে পরিণত হয়। অন্ধকার নামলেই নির্জন সময়ে যাত্রীবাহী গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অস্ত্রের মুখে সর্বস্ব লুটে নেয় ডাকাত দল।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ারের নেতৃত্বে উপর-পরিদর্শক (এসআই) আরকানুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে এ অভিযান চালায়। দীর্ঘ অভিযানের পর গহিন জঙ্গলের একটি গোপন আস্তানা থেকে ডাকাতদের আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র, কিরিচ, রশি, মুখোশসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উচিতারবিল মুসলিমনগর গ্রামের আবদুল মজিদের পুত্র আবুল কালাম (২৪), নজরুল ইসলামের পুত্র মোবারক আলি (২৫), ফতিয়াঘোনা এলাকার শফর মুল্লুকের পুত্র মোড় : ফারুক (২৭), একই এলাকার ফয়েজ আহমদের পুত্র জিসান (২৩) ও বার্মাইয়া জসিম (২৫)। থানার ওসি তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, চকরিয়া-লামা সড়কটি পাহাড়ি ও বনাঞ্চল ঘেঁষা হওয়ায় ডাকাতরা প্রায়ই সুযোগ নেয়। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়মিত টহল জোরদার করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এ সড়কে ডাকাতির ঘটনা নতুন নয়। গত কয়েক মাসে অন্তত কয়েক দফায় ডাকাতির ঘটনায় যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নেওয়া হয়েছে। অনেক সময় যারা বাধা দেয়, তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করা হয়েছে।
লামা থেকে নিয়মিত চকরিয়ায় আসা ব্যবসায়ী নুরুল আবসার বলেন, ডাকাত আতঙ্কের কারণে সন্ধ্যার পর কেউ একা এই সড়কে যাতায়াত করতে চায় না। আমাদের গাড়ি থামিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে ৮-১০ জন ডাকাত ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশের অভিযান আমাদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে, তবে পুরো চক্র ধরা না পড়া পর্যন্ত ভয় কাটবে না।
চকরিয়া থানার ওসি জানান, নিয়মিত টহল এবং গোপন সোর্স কাজে লাগিয়ে পুরো চক্রকে ধরার চেষ্টা চলছে। গ্রেফতার হওয়া ডাকাতদের জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের অন্যান্য সদস্যদের নামও পাওয়া যেতে পারে।
অন্যদিকে স্থানীয়রা বলছেন, এই সড়কটি কক্সবাজার-বান্দরবানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শুধু পুলিশ নয়, বনবিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, চকরিয়া-লামা সড়কে ডাকাতি বহুদিনের সমস্যা। পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানে ৫ ডাকাত গ্রেফতার হলেও পুরো চক্র এখনও সক্রিয়। তাই যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি। সড়কটিকে নিরাপদ করতে নিয়মিত অভিযান চালানোর পাশাপাশি প্রযুক্তি-নির্ভর নজরদারি ও স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ জরুরি বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতনমহল।