জিরুনা ত্রিপুরাকে স্থায়ী অপসারণ করল মন্ত্রণালয়


অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে দায়িত্ব থেকে বিরত থাকা খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরাকে এবার স্থায়ী অপসারণ করল মন্ত্রণালয়।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজ ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার জিরুনা ত্রিপুরাকে স্থায়ী অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করল পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোঙ্গঁল চন্দ্র পাল স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ (১৯৮৯ সনের ২০ নং আইন) এর ধারা ১২(১) এর (গ) নম্বর উপধারার বিধান মোতাবেক খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (দায়িত্ব থেকে বিরত) জনাব জিরুনা ত্রিপুরাকে তার পদ থেকে স্থায়ী অপসরণ করা হলো।’
সংশ্লিষ্ট আইন ও ধারায় যা রয়েছে-
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ এর ধারা ১২ পরিষদের চেয়ারম্যান ইত্যাদির অপসারণ সম্পর্কিত উল্লেখিত ধারার উপধারা (১) এর গ-তে বলা হয়েছে- চেয়ারম্যান বা কোনো সদস্য তাঁহার স্বীয় পদ হইতে অপসারণযোগ্য হইবেন, যদি তিনি অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দোষে দোষী হন অথবা পরিষদের কোনো অর্থ বা সম্পত্তির কোনো ক্ষতি সাধন বা উহা আত্মসাতের জন্য দায়ী হন।’ ব্যাখ্যায় এই উপ-ধারায় অসদাচরণ বলিতে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ইচ্ছাকৃত কুশাসনও বুঝাইবে।’
২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান জিরুনা ত্রিপুরা। ৭ জুলাই ২০২৫ সোমবার এক চিঠিতে অসদাচরণ-দুর্নীতির অভিযোগে জিরুনা ত্রিপুরাকে সব ধরনের দাপ্তরিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়, জেলা পরিষদের ১৪ সদস্যের সঙ্গে খারাপ আচরণ, হস্তান্তরিত দপ্তরের প্রধান ও কর্মীদের সঙ্গে অসদাচরণ, স্বৈরাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, শিক্ষক বদলি বাণিজ্য, ঠিকাদারদের বিলের ফাইল আটকে ঘুষ বাণিজ্য এবং চরম দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত এবং বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জিরুনা ত্রিপুরাকে সব ধরনের দাপ্তরিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরপর মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি জিরুনা ত্রিপুরার বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিটি অভিযোগের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে সত্যতা পায় এবং প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে আজ স্থায়ী অপসারণ করে।
প্রজ্ঞাপনের অনুলিপি প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, সেনাবাহিনীর চট্টগ্রামস্থ ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জিরুনা ত্রিপারাসহ সংশ্লিষ্ট ২২টি কার্যালয়ে পাঠানো হয়।