জেএসএস ও ইউপিডিএফ নিষিদ্ধের দাবি সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের

রাষ্ট্রদ্রোহী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এবং ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন সিএইচটি সম্প্রীতি জোট নেতৃবৃন্দ। বর্মাছড়ি সেনা ক্যাম্প স্থাপন নিয়ে জেএসএস ও ইউপিডিএফ’র চলমান রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এই সংগঠনের নেতারা।
১ নভেম্বর শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সুলতান আহমেদ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জোটের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক এই প্রতিবাদ জানান। সংবাদ সম্মেলনে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানায় সিএইচটি সম্প্রীতি জোট নেতৃবৃন্দ।
জোটের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক পার্বত্য অঞ্চলে দীর্ঘদিনের নিরাপত্তাহীনতার চিত্র তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জেএসএস ও ইউপিডিএফ’র সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং খুন-গুমের মাধ্যমে বাঙালি-অবাঙালিসহ ১৩টি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ওপর নিপীড়ন চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি বর্মাছড়িতে সেনা ক্যাম্প স্থাপনকে কেন্দ্র করে তারা এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যাচার করে বাংলাদেশের সরকার ও সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, এই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী তাদের রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য পাহাড়ি নারী ও শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে দাঙ্গা বাধানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
ইঞ্জিনিয়ার শাক দৃঢ়তার সাথে বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ এবং আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সকল অপতৎপরতা বন্ধ করতে হলে সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জোটের মুখপাত্র পাইশিখই মারমা আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, জেএসএস এবং ইউপিডিএফ-এর সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন নয়, সংঘাত চায়। তারা নিজেদের অবৈধ স্বার্থ রক্ষায় শান্তিপ্রিয় পাহাড়িদের জীবনকে জিম্মি করছে। বর্মাছড়িতে সেনা ক্যাম্প স্থাপন জনগণের নিরাপত্তার জন্য একটি অপরিহার্য রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ। কিন্তু তারা বৌদ্ধমন্দিরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নিরীহ পার্বত্য চট্টগ্রামে অ-বাঙালিদের ভুল বোঝাচ্ছে, যা ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের শামিল। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং সকল নিরীহ পাহাড়িকে এসব মিথ্যাচার থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জোটের সদস্য সচিব ইখতিয়ার ইমন, তন্ময় চৌধুরী, শাহীন আলম সহ সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এই পরিস্থিতি নিরসনে সরকারের কাছে যেসব দাবি উত্থাপন করেছেন তা হলো- বর্মাছড়ি সেনা ক্যাম্প স্থাপন নিয়ে জেএসএস ও ইউপিডিএফ কর্তৃক পরিচালিত সকল অপপ্রচারের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল জাতিসত্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে হবে এবং অস্ত্রধারী আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সকল প্রকার সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

















