বিজিবির অভিযানে ২৯ জন রোহিঙ্গা উদ্ধার, ৩ পাচারকারী আটক

fec-image

কক্সবাজারের টেকনাফে গহীন পাহাড়ের পর সাগর উপকূলে অভিযান চালিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। অভিযানে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারকালে ২৯ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার ও তিনজন পাচারকারী সদস্যকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে পাচারে ব্যবহৃত নৌকা।

বুধবার (২২ অক্টোবর) মধ্যরাতে মেরিন ড্রাইভ সৈকত এলাকায় পরিচালিত এক ঝটিকা অভিযানে গভীর সাগরে পাচারের মুহূর্তে ওই ২৯ জনকে উদ্ধার করা হয়। এসময় তিনজন পাচারকারী সদস্যকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। তারা হলেন- টেকনাফের মহেশখালীয়া পাড়ার মৃত মোজাহার মিয়ার পুত্র মোঃ সলিম (৩৫), মজিবুর রহমানের পুত্র মোঃ নুরুল আবছার (১৯) ও উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প, ব্লক –এ এর (এফসিএন নম্বর-১৪৬৭৯১) করিমুল্লাহর পুত্র মনসুর আলম (২২)।

বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকাল তিনটায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্ণেল আশিকুর রহমান।

তিনি জানান- গত মঙ্গলবার টেকনাফ ২ বিজিবি টেকনাফের রাজাছড়ায় পরিচালিত অভিযানের সূত্রধরে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নজরদারি সমুদ্র উপকূলের দিকে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। ওই অভিযানে পালিয়ে যাওয়া আসামীরা বেশ কিছু ভুক্তভোগীকে সমুদ্রপথে পাচারের চেষ্টা করবে। এমন ধারণা করে ওই দিন সন্ধ্যায় মেরিন ড্রাইভ সৈকতের কৌশলগত বেশকিছু পয়েন্টে ২ বিজিবি’র বিশেষ টহল দলের সদস্যরা নজরদারি শুরু করে। একপর্যায়ে রাত গভীর হলে সমুদ্র উপকূলে সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়। বিজিবি সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলটিকে ঘিরে দেখতে পায় মানব পাচারকারী চক্র গোপনে ২৯ জন ভুক্তভোগীকে একটি নৌযানে গভীর সাগর দিয়ে পাচারের জন্য প্রস্তুত করছে। বিজিবি জওয়ানদের দ্রুত ও কার্যকরী হস্তক্ষেপে ভুক্তভোগীদের অনিশ্চিত ও বিপজ্জনক সমুদ্র যাত্রা থেকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকেই মানব পাচারের দায়ে চক্রটির ৩ জন মূলহোতাকে দেশীয় অস্ত্রসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করে।

এছাড়াও অভিযানের সময় মোঃ মাহমুদুল হক (৩১), সৈয়দুল ইসলাম (৩৭),আজিজুল হক (৩০) সহ আরো অজ্ঞাত-৬/৭ জন পালিয়ে যায়।  এসময় ঘটনাস্থলে আটককৃতদের কাছ থেকে ১ টি চাকু, একটি মোটর সাইকেল ও একটি  ইঞ্জিন চালিত সাম্পান নৌকা উদ্ধার করা হয়েছে।

টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন,”টেকনাফ সীমান্তে মানব পাচারকারী ও সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রগুলোর জন্য দিনটি একটি চরম দুঃসংবাদ বহন করে এনেছে। আমরা ভোরে পাহাড়ের দুর্গম চূড়া থেকে জিম্মি উদ্ধার করেছি এবং সন্ধ্যায় সমুদ্র উপকূলে মানব পাচার বানচাল করেছি। সর্বশেষ দুইটি সফল মানব পাচার বিরোধী অভিযানের মাধ্যমে বিজিবি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে,টেকনাফ সীমান্তের পাহাড় থেকে সমুদ্রের জলসীমা পর্যন্ত কোনো অপরাধীর জন্য এক ইঞ্চি জায়গাও নিরাপদ নয়। মানবতা বিরোধী এমন জঘন্য অপরাধ আমরা কোনোভাবেই বরদাশত করব না।  আমাদের এই ধারাবাহিক ও কঠোর নজরদারি এবং অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

এসময় তিনি আরো জানান- উদ্ধারকৃত ২৯ জন ভুক্তভোগীকে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং আটককৃত ৩ জন মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। তিনি আরো জানান- বিজিবি দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা এবং সীমান্ত স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণে সদা বদ্ধপরিকর।

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বিজিবি, মানবপাচার, মালেশিয়া
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন