ভাষাসৈনিক আহমদ রফিকের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক


ভাষাসৈনিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহমদ রফিকের মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আহমদ রফিক ছিলেন ভাষা আন্দোলনের এক অগ্রগণ্য সাক্ষী ও সংগ্রামী কণ্ঠস্বর। একই সাথে তিনি ছিলেন একজন অনন্য কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও রবীন্দ্রতত্ত্বচর্চার দিশারী। শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনার মাধ্যমে তিনি বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, রবীন্দ্রচর্চার ক্ষেত্রে তার অবদান দুই বাংলায় সমানভাবে শ্রদ্ধার আসন পেয়েছে। কোলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেছে, যা তার বিদগ্ধতার স্বীকৃতি।
প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, দেশের সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার জগতে আহমদ রফিকের প্রয়াণ এক অপূরণীয় ক্ষতি। দৃষ্টিশক্তি ও শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও তিনি শেষ দিন পর্যন্ত জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে গেছেন।
মরহুমের রূহের মাগফেরাত কামনা করে তিনি বলেন, ‘আহমদ রফিকের জীবন ও কর্ম ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে তাকে স্মরণ করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, শুভানুধ্যায়ী ও সাহিত্য-সংস্কৃতিমনা জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আহমদ রফিকের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের একজন অগ্রণী সংগ্রামী হিসেবে আহমদ রফিক মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার সংগ্রামে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছেন। পাশাপাশি সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজচিন্তায় তার অবদান ছিল অনন্য।
শোকবার্তায় তিনি আরো বলেন, আহমদ রফিক আজীবন মুক্তচিন্তা, মানবিক মূল্যবোধ ও প্রগতির পক্ষে কলম চালিয়েছেন এবং প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক শেখ রেজাউদ্দিন আহমেদ (কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন)। এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের রূহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার, পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।
মহাপরিচালক বলেন, ‘আহমদ রফিক দেশের মহান ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং আজীবন বাংলাভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করেছেন। তার জীবন ও কর্ম আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য তার অবদান জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
সূত্র : বাসস