মাটিরাঙ্গায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে সাফল্য


কালের পরিক্রমায় নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন আর কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রমে পাহাড়ে কৃষিতে নবদিগন্তের সূচনা করেছে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ। প্রথমবারের মত গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে সাফল্যে মুখ দেখেছেন কৃষক।
প্রতিকূল আবহাওয়ায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও সঠিক পরিচর্যায় গ্রীম্বের মৌসমে পরীক্ষা মুলক ৫ শতক জমিতে শীত কালিন টমেটো চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছেন খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা পৌর সভার কৃষক আবু বক্কর। ঋতু চক্রের আবর্তে এখন শরৎকাল। অনেকটা শীতকালের টমেটোর মতোই তার জমিতে কাঁচাপাকা লাল সবুজ টমেটোতে শোভা পাচ্ছে।
মাটিরাঙ্গার ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (আইডিএফ) কৃষি ইউনিটের আওতায় পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এবং আইডিএফের কৃষি উন্নয়ন বিভাগ এটি বাস্তবায়নে শীতকালীন ফসল হিসেবে পরিচিত টমেটো এবার তিনি গ্রীষ্মকালেও চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন। গ্রীষ্ম মৌসুমে ও দীর্ঘ সময় গাছ টিকে থাকতে বেগুনের চারার সাথে গ্রাফটিং কলম করা হয়। এতে গাছ দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকে এবং ফলন ভালো হয়।
কৃষক আবু বক্কর প্রথমবারের মতো পরীক্ষা মুলক মাত্র ৫ শতক জমিতে বারি হাইব্রিড টমেটো-৮ জাতের ৫০০ গ্রাফটিং চারা রোপণ করেন। এতে সর্বমোট খরচ হয়েছে ৩০হাজার টাকা। আইডিএফ এর অর্থায়নে প্রতিটি চারা ১৬ টাকা দরে যশোর থেকে আনা হয় । জমিতে মালচিং পেপার ব্যবহারসহ সার, কীটনাশক, হলুদ ফাঁদ,ফোরেমন ফাঁদসহ, এসব খরচ আইডিএফ বহন করে।
কৃষক আবু বক্কর পার্বত্যনিউজকে জানান, ইতোমধ্যে প্রতি কেজি টমেটো ১১৫ টাকা দরে প্রায় ৩০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। মৌসুম শেষে প্রায় ৮০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রির আশা করছেন । গ্রীষ্মকালে টমেটোর চাহিদা অনেক বেশি থাকে এবং দামও ভালো পাওয়া যায়। শীতকালের তুলনায় খরচ কিছুটা বেশি হলেও, বাজার মূল্য বেশি থাকায় লাভও বেশি হয়।
আইডিএফ’র সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিথুন দাশ বলেন, “২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমরা মাটিরাঙ্গার চড়পাড়ায় গ্রীষ্মকালীন টমেটোর প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করেছি। অল্প জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেই কৃষক আবু বক্কর সাফল্য পেয়েছেন। তার এ সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে অন্যান্য কৃষকরাও গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে আগ্রহী হবে আশা করেন এবং পাহাড়ে কৃষি খাতের ব্যাপক উন্নয়ন এবং কৃষিতে বিল্পব ঘটাতে আইডিএফ এসব উদ্যেগ গ্রহণ বলে জানান তিনি।
আবু বক্করের এই সাফল্য শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়, এটি পাহাড়র কৃষিক্ষেত্রে নব দিগন্তের সূচনা করেছে। এতে একদিকে কৃষক পারিবারিক ও স্থাীয় চাহিদা পূরন হচ্ছে,অন্য দিকে গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে।