মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’

fec-image

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ানের কয়েকটি দেশ মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানকে ‘অভ্যন্তরীণ’ বিষয় বলে বিবেচনা করছে। জোটের পক্ষ থেকে অথবা সদস্য দেশগুলোর পক্ষ থেকেও মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের ঘটনায় সরাসরি নিন্দা জানানো হয়নি। খবর বিবিসির।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দিশের জোট আসিয়ানের সদস্য দেশ মিয়ানমারও। আসিয়ানের বর্তমান চেয়ারম্যান ব্রুনেই এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই জোট আশা করে জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান রেখে সংলাপের মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।’ ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে আসিয়ান জোটের সদস্য দেশগুলোতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এই এলাকার শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

তবে আসিয়ানের তিনটি সদস্য দেশ-কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন এবং থাইল্যান্ড খোলাখুলি বলেছে যে, মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা তাদের একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ নিয়ে তাদের কিছু বলার নেই।

কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন বলেছেন, ‘অভ্যুত্থান মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’ থাইল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রীও এক বিবৃতিতে একই ধরনের মন্তব্য করেছেন।

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট দুতার্তের মুখপাত্র এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা তাদের নিজেদের বিষয় এবং এনিয়ে আমরা নাক গলাতে চাইনা, তবে আমরা আশা করি পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে।’

এদিকে মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা আশা করে মিয়ানমারে নির্বাচন নিয়ে যে বিরোধ চলছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ বসে তা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করে ফেলবে। তবে নিন্দা না করলেও অপেক্ষাকৃত শক্ত ভাষায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইন্দোনেশিয়া এবং সিঙ্গাপুর।

ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন আইনের শাসন, সুশাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং সাংবিধানিক সরকার আসিয়ান জোটের মূলমন্ত্র।

সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, তারা আশা করে সব পক্ষ ধৈর্য ধারণ করবে এবং একসাথে বসে আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করবে।’

সোমবার সকালে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করে ক্ষমতা গ্রহণ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান অং সান সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ বেশ কয়েকজনকে আটকের পর পরই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।

গত নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে জালিয়াতি বলে উল্লেখ করেই মূলত ক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী। কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং হ্লেইংয়ের কাছে দেশের ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।

জরুরি অবস্থার মধ্যেই রাজধানী নেইপিদোতে মোবাইল ফোন ও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং রেডিওর প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন মায়াবতির সম্প্রচার চালু রয়েছে। সোমবার সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের বিষয়টি মায়াবতির মাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়েছে। টেলিভিশনের এক বিবৃতিতে জানানো হয় যে, কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং হ্লেইং দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন