মিয়ানমার সীমান্তে ৭ দিনের ব্যবধানে ৬৫টি চোরাই গরু জব্দ

fec-image

মিয়ানমার ঘেষা নাইক্ষ্যংছড়ি-আলীকদম সীমান্ত পয়েন্টের পোয়ামূহুরী থেকে আরো ৪০টি জব্দ করেছে ৫৭ বিজিবি। মঙ্গলবার (২৩ মে) রাতে গরুগুলো জব্দ করেন তারা।

আলীকদম ব্যাটালিয়ান (৫৭ বিজিবি) সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর ১ সপ্তাহ আগে গত মঙ্গলবার (১৮ মে) বিকেলে ২৫টি গরু জব্দ করেছিলেন আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহরুবা ইসলাম।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সীমান্তের ৫৩ ও ৫৪ পিলার এলাকা হয়ে স্থানীয় চোরাকারবারিবা গরুগুলো মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচার করছিলো। দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে গরু চোরাচালান হচ্ছে এমন খবরের ভিত্তিতে প্রশাসন ও সীমান্ত রক্ষী বিজিবি তৎপর হয়। আর তারই ধারাবাহিকতায় আলীকদমর ৫৭ বিজিবি টহল দল সোমবার (২৩ মে) দিবাগত গভীর রাতে অভিযান শুরু করে। পরে তারা মঙ্গলবার (২৪ মে) রাত ২টা ৪০টি গরু জব্দ করেন।

বিজিবি সূত্র জানান, পাচারকারীরা নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আলীকদম উপজেলা সদরের ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে পোয়ামুহুরী সীমান্ত এলাকায় পৌঁছলে বিজিবি গরুগুলো জব্দ করে।

বিজিবির নির্দেশে মঙ্গলবার (২৪ মে) রাতে উপজেলা সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে আলীকদম-পোয়ামুহুরী সড়কের ৭ কিলোমিটারে একটি চেকপোষ্ট স্থাপন করা হয়। চেক পোস্ট বসানোর খবর জেনে গরুগুলো সড়ক পথে না এনে ট্রাক থামিয় ভিন্ন সড়ক সড়ক দিয়ে গভীর জঙ্গলে তাড়িয়ে নিয়ে যেতে থাকে চোরাকারবারিরা।

গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে এই খবর জেনে যায় বিজিবি। পরে তারাও কৌশলে নামে। মঙ্গলবার (২৪ মে) রাত ২টা সময় চল্লিশটি গরু আটক করতে সক্ষম হন তারা।

সূত্র আরো জানান , জব্দ গরু ৪০ টি মঙ্গলবার (২৪ মে) বান্দরবান কাস্টমস এর কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে।

স্থানীয় খামারীরা জানান, তারা সরকার থেকে ঋণ নিয়ে নিয়ে খামার গড়ে তুলেছেন। এখন সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে নাইক্ষ্যংছড়ি,আলীকদম ও রামু উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাই গরুর ঢল নামার আশঙ্কায় তারা দুঃচিন্তায় এবং বিপাকে পড়েছেন। তারা বাজারে গরুর ন্যায্য মূল্য না পেলে
বড় ধরণের ক্ষতিতে পড়বেন বলে জানান।

উল্লেখ্য, মিয়ানমার সীমান্ত পথ পাড়ি দিয়ে কয়েক মাস ধরে ব্রাহামা প্রজাতির গরু নাইক্ষ্যংছড়ি হয়ে আলীকদমে ঢুকছিল। এ প্রেক্ষাপটে গত ১৮ মে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহরুবা ইসলাম মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আলীকদম-পোয়ামুহুরী সড়কের বাবু পাড়া এলাকা হতে ২৫টি গরু, ২টি ট্রাক ও একজন পাচারকারীকে আটক করেন।

পুলিশ আকটকৃত ব্যক্তিকে আদালতে হস্তান্তর করলে আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠান। আটককৃত ২৫টি গরু বর্তমানে থানা হেফাজতে আছে। ইউএনওর অভিযানের পর পাচারকারী চক্রটি ক’দিন নীরব থাকলেও ৭ দিন পর পুনরায় সক্রিয় হয়ে অপতৎপরতা শুরু করলে ৫৭ বিজিবির অভিযানের আবার তাদের লাগামে টান পড়ে।

এখন চেরাকারবারীরা নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ঝুঁকে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বোদ্ধা মহল। মহলটি আরো বলেন, মিয়ানমারের এ চোরাই গরু এ পয়েন্টে বিক্রি হয় নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা ও বাইশারী বাজার, আলী কদম বাজার ও রামুর গর্জনিয়া বাজারে। আর দক্ষিণ পয়েন্টে উখিয়া, কোটবাজার, মরিচ্যা ও ভালুকিয়া বাজারে বিক্রি হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন