শ্রমিকের কাজ করেই লেখাপড়া করেন পানছড়ির আইভি
খাগড়াছড়ির পানছড়ি সরকারি কলেজে ডিগ্রী প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আইভি চাকমা। সে উপজেলার ৩নং পানছড়ি ইউপির কানুনগোপাড়া এলাকার অমলেন্দু চাকমা ও বিথীকা চাকমার মেয়ে। পাহাড়ের কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করেই প্রতিদিন সকালে জীবন যুদ্ধের সংগ্রামে কাজে ছুটে আসে আইভি। মাটি কাটা, ধানের চারা রোপন, জঙ্গল থেকে লাকড়ি কাটা ও ধান কাটায় খুব পারদর্শী সে। তাই শ্রমিকের কাজ করা তার জন্য নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। বর্তমান সময়ে সে চেংগী নদীতে ভোর থেকে মুলা ধোয়ার কাজে ব্যস্ত। মাসের অধিক সময় চলবে এ কাজ।
সরেজমিনে চেংগী নদীর হাটুজল বেয়ে বালুর চরে গিয়ে দেখা যায়, মুলা ধোয়ার কাজে ব্যস্ত আইভি। তার সাথে আলাপকালে জানায়, দৈনিক তিনশত টাকা বেতনে মুলা ধোয়ার কাজ করছে। তার রোজগারের টাকা দিয়েই ছোট বোন বেবি চাকমার পড়া লেখার খরচও চলে। বেবি পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। বাবা-মা দু’জনেই বয়োবৃদ্ধ। তারাও শ্রমিকের কাজ করে। শ্রমিকের কাজের ফাঁকে ফাঁকে আইভি সেলাই কাজও রপ্ত করে নিয়েছে। একখানা সেলাই মেশিন কেনার শখ রয়েছে তার। এলাকায় কাপড় সেলাই করলে আয়-রোজগার খারাপ হবে না বলে জানায় সে। তবে অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে মেশিন কেনা কখন হবে তা অনিশ্চিত।
কানুনগোপাড়া এলাকার মুলা চাষী বিমলেন্দু চাকমা ও কামাল হোসেন জানায়, আইভি খুব পরিশ্রমী। কাজে তার কোন কৃপণতা নেই। শ্রমিকের কাজ করে মেয়েটি মা-বাবাকে দেখে, নিজে পড়ে আর ছোট বোনের পড়ালেখার খরচও চালায়। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের জন্য সে অনুকরণীয় বলে জানালেন তারা।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনিকা বড়ুয়া জানান, আইভি যদি ইচ্ছে করে পানছড়ি মহিলা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সেলাই কাজ আরো ভালোভাবে শিখে একটি সনদ সংগ্রহ করতে পারে। তার প্রতি মহিলা অধিদপ্তর সব সময় আন্তুরিক। উদ্যোক্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করার ব্যাপারে অধিদপ্তর তাকে সার্বিক সহযোগিতা দিবে।