সংঘবদ্ধ ধর্ষণ কি সন্ত্রাস মোকাবিলার পথ: গাম্বিয়ার প্রশ্ন

fec-image

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের শুনানিতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, রাখাইনে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়েছে। শুনানির তৃতীয় দিনে মামলার বাদী গাম্বিয়া সেখানে সংঘটিত নারী নিপীড়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রশ্ন তুলেছে, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ কি সন্ত্রাস মোকাবিলার পথ?

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মামলা করে গাম্বিয়া।

মামলায় নিজ দেশের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে নেমে শুনানির প্রথম দিন বুধবার সু চি দাবি করেন, গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় রাখাইনের একটি খণ্ডিত ও বিভ্রান্তিকর চিত্র হাজির করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। সু চি দাবি করেন, রাখাইনে আরসার মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার শুনানির শেষ দিনে গাম্বিয়ার আইনজীবী মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দ্বারা সংঘটিত সংঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রশ্ন তোলেন, এমন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কি সন্ত্রাস মোকাবিলা করতে হয়?

২০১৭ সালেই জাতিসংঘের অনুসন্ধানী দল তাদের অনুসন্ধানে জানিয়েছিল, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘবদ্ধ ধর্ষণকে জাতিগত নিধনের অস্ত্র বানিয়েছে মিয়ানমার। এরপর ২০১৮ সালে ওই অনুসন্ধানী দল পাঁচটি আলামত হাজির করে জানায়, রোহিঙ্গাদের বিতাড়নে কাঠামোবদ্ধ যৌন নিপীড়নকে ব্যবহার করেছে সে দেশের সেনাবাহিনী। একে গণহত্যার আলামত আখ্যা দিয়েছিল তারা। পরবর্তীতে আরও একটি ঘটনাকে যুক্ত করে সংস্থাটির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন দৃঢ়ভাবে জানায়, গণহত্যার উদ্দেশ্যেই সেখানে যৌন নিপীড়নকে ব্যবহার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিচার প্রক্রিয়ার প্রথম দিনে বাদীপক্ষের অভিযোগ শোনা হয়। দ্বিতীয় দিনে মিয়ানমারের হয়ে কথা বলেন সু চি। শুনানির শেষ দিনে (১২ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় দেড়ঘণ্টা বলার সুযোগ পায় গাম্বিয়া। বিরতির পর রাত সাড়ে ৯টা থেকে দেড়ঘণ্টা নিজেদের যুক্তি তুলে ধরবে মিয়ানমার।

সূত্র: বাংলা টিব্রিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন