আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা উচ্ছেদ করলো কউক
আদালতের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ অমান্য করে বিনা নোটিশে স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)। ভেঙে তছনছ করে ফেলা হয়েছে দোকানের মূল্যবান আসবাবপত্র।
সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার বাসিন্দা রেহেনা বেগমের মালিকানাধীন ‘বিসমিল্লাহ রেস্টুরেন্ট’ নামক খাবার হোটেল ভেঙে দেয়া হয়েছে। এতে দোকান মালিকের অন্তত অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী রেহেনা বেগমের ছেলে তৌহিদ আরমান অভিযোগ করে বলেন, আমার মামা মোহাম্মদ হাশেম ২০০১ সালে আম্মাকে দানপত্র মূলে .০১১৩ একর জমি দখল দেন। যার অনুবলে ঝিলংজা মৌজার সৃজিত বিএস খতিয়ান নং-১২২৪১ প্রচারিত হয়। ওই জমিতে টিনশেড ঘর করে সেখানে একটি পানের দোকান ও আরেকটি খাবার হোটেল স্থাপন করি। আমাদের মালিকানাধীন জমি সড়ক ও জনপদের দাবি করা হলে সমস্ত কাগজপত্র দেখালে তারা সরে যায়। পরে কউকের লোকজন গিয়ে ‘লাল চিহ্ন’ দেয়। এরপর ঘটনা জানিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করি।যার রিট পিটিশন নং- ৭১২১/২১।
গত ১২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুর রহমান ও খন্দকার দিলিরুজ্জামানের দৈত বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। শেষে বিরোধীয় জমিতে ‘স্থিতাবস্থা বজায়’ রাখার আদেশ দেন। আদেশের পর ডিসি, কউক চেয়ারম্যান এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়। যার রিসিভ কপি সংরক্ষিত।
তৌহিদ আরমান বলেন, ‘স্থিতাবস্থা বজায়’ রাখার বিষয়ে আদালতের আদেশসহ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারও করা হয়।
উচ্চ আদালতের আদেশ ও উকিল নোটিশ তোয়াক্কা না করেই আমাদের মালিকানাধীন জমিতে নির্মিত দোকানঘর উচ্ছেদ ও মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট করেছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। যা সুস্পষ্ট আদালত অবমাননার শামিল।
তৌহিদ আরমান হতাশার সুরে বলেন, আমার আব্বা হাফেজ আবুল কাশেম ২০০৮ সালে এবং আম্মা ২০১৪ সালে মারা যান। দোকানঘর থেকে প্রাপ্ত ভাড়ার টাকায় আমরা দুই ভাই ৩ বোন কোনমতে চলছি। জীবিকার একমাত্র অবলম্বনটি ভেঙে তছনছ করে দেয়ায় পরিবারের ঘানি কিভাবে টানবো, ভেবে পাচ্ছি না। আমি এর প্রতিকার চাই।
এ বিষয় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদের নিকট জানতে চাইলে সাংবাদিকদের বলেন, নিয়ম মেনে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা করা হয়েছে।
উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আদালত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এ ধরণের তথ্য আমাদের কাছে নেই। এসব স্থাপনার মালিকদের যদি আদালতের কোন নিষেধাজ্ঞার কাগজপত্র থাকে তাহলে তারা আমার সঙ্গে বসুক।