কাপ্তাই সীতারঘাটে

৪০ বছর ধরে জরাজীর্ণ মাটির ঘরে বসবাস রমজানের

fec-image

দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৫নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে সীতারঘাট এলাকায় জরাজীর্ণ মাটির ঘরে বসবাস করছেন মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী।

রমজান পেশায় একজন জেলে। স্ত্রী ও ৪ ছেলে-মেয়ে নিয়ে সংসার তার। কর্ণফুলী নদীতে মাছ পেলে তা বিক্রয় করেই চুলা জ্বলে। আর মাছ না পেলে সংসার তো চলেনা।

১৭ বছর পূর্বে বড় ভাই দুলাল শারীরিক বিভিন্ন সমস্যাজনিত কারণে স্ত্রী, ৩ ছেলে-মেয়ে রেখে মারা যায়। বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর বাবার ইচ্ছায় বড় ভাইয়ের সংসারের ৩ ছেলে-মেয়েকে মানুষ করার জন্য ভাবিকে বিয়ে করে রমজান। এর কয়েক বছর পর রমজানের ঘরে একটি সন্তান আসে। এর কয়েক বছর রমজানের পর মা মারা যায় এবং দেড় বছরের মাঝে বাবা নুরুল ইসলামও মারা যায়। এরপর থেকেই সংসার চলে নির্মম টানাপোড়ন ও অভাব অনটনে। বাবার রেখে যাওয়া জরাজীর্ণ মাটির ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে রমজান।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের ঢালুতে মাটির ঘরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ফাটল এবং জরাজীর্ণ অবস্থা ঘরের টিনের। বৃষ্টি হলে ঘরের মধ্যে পানি পড়ে সয়লাব হয়ে যায়। বৃষ্টির পানি মাটির ঘর চুষে নেয়ার ফলে নড়বড়ে হয়ে গেছে। যেকোন সময় বড় ধরনের অঘটন হতে পারে জেনেও মৃত্যুর ঝুঁকে নিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছে।

রমজান আলী বলেন, আমি অসহায়, আমার কোন জায়গা জমি বা সম্পত্তি নেই। দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত স্ত্রী আর ৪ ছেলেমেয়েকে নিয়ে ভাঙ্গা ও ঝরাজীর্ণ ঘরে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছি। আমার তেমন কোন অর্থ নেই যে আমার এই ভাঙ্গা ও জরাজীর্ণ ঘরটি মেরামত করব।তিনি উপজেলা প্রশাসনসহ বিত্তবান লোকদের সহযোগিতা কামনা করেন।

৫নং ওয়াগ্গা ইউনিয়ন পরিষদের শিলছড়ি ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সরোয়ার হোসেন জানান, রমজান হোসেন একজন জেলে ও অসহায় পরিবার পরিজন নিয়ে মাটির জরাজীর্ণ ভাঙ্গা ঘরে বসবাস করে আসছে।

তিনি আরো জানান, সম্প্রতি কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমেন দে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রুহুল আমিন ঘরটি পরিদর্শন করে। ভাঙ্গা মাটির ঘরটি মেরামত করার বা কিছু একটা করার আশ্বাস দেয়। কিন্ত দুঃখের বিষয় নির্বাহী অফিসার বদলি হয়ে যাওয়ার ফলে আর কোন কিছুই করা হয়নি। অসহায় পরিবারের ঘরটি সংস্কার বাবদ উপজেলা প্রশাসনসহ সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতার অনুরোধ জানান তিনি।

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কাপ্তাই, রাঙামাটি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন