“সরকার ঘোষিত জনপ্রতি ৮৬ কেজি চাল দেয়ার কথা থাকলেও বঞ্চিত হবে প্রায় অর্ধেক মৎস্য শ্রমিক”

কুতুবদিয়ায় ১৫ হাজার মৎস্য শ্রমিক দিশেহারা

 

বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিনের মৎস্য আহোরণে নিষেধাজ্ঞায় কুতুবদিয়ার প্রায় ১৫ হাজার মৎস্য শ্রমিক এখন দিশেহারা। ছোট-খাটো নিষেধাজ্ঞা তারা কাটাতে পারলেও বিশাল দু‘মাসেরও অধিক সময়ে কর্মহীন-বেতনবিহীন কাটাতে হবে তাদের।

এসময় সরকার ঘোষিত জনপ্রতি ৮৬ কেজি চাল দেয়ার কথা থাকলেও বঞ্চিত হবে প্রায় অর্ধেক মৎস্য শ্রমিক। নানা ভোগান্তির আশঙ্কায় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ৫টি প্রস্তাবনা প্রেরণ করেছেন বলে জানা যায়।

উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে দ্বীপ কুতুবদিয়ায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৮ হাজার ৪৫৯ জন। এর মধ্যে কার্ডধারী মৎস্য শ্রমিক মাত্র ৪ হাজার ৪৪৫জন। উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২ হাজার ফিশিং বোট সাগরে মৎস্য আহরণ করে থাকে। প্রকল্প বন্ধ থাকায় গত দু‘বছর ধরে জেলে নিবন্ধন ও পরিচয় পত্র তৈরির কাজও বন্ধ।

ফলে যোগ্যতা থাকা সত্বেও নিবন্ধিত হতে পারেনি হাজার হাজার মৎস্য শ্রমিক। যে কারণে ভোটার হয়নি এমন যুবক কর্মচারি সহ অন্তত ১৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে থাকে। জেলে হিসেবে নিবন্ধনকৃত মৎস্য শ্রমিক রয়েছে মাত্র ৮ হাজার ৪৫৯ জন। বাকী অর্ধেক শ্রমিক অঘোষিত জেলে হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে বছরের পর বছর।

ধুরুং জেলে পল্লীর মৎস্য শ্রমিক বিকাশ জলদাশ বলেন, এত দীর্ঘ সময় সাগরে নিষেধাজ্ঞা থাকায় অধিকাংশ জেলে পরিবারে অনাহার দেখা দেবে। ৭/৮ জনের পরিবারে মাত্র একজনের নিবন্ধন আছে। বাকিরা বয়স না হওয়ায় নিবন্ধন পায়নি। সরকারি সহায়তা পাবে একজন। বাকিদের পরিণতি কি হবে? এমনিতেই মৎস্য শ্রমিকরা অন্য কোন পেশায় অভ্যস্ত নয়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, নিষেধাজ্ঞার ৬৫ দিনের ভেতর মৎস্যজীবীদের দুর্দশার বিষয় মাথায় রেখে বোট মালিক ও মৎস্যজীবীদের সাথে মত বিনিময়ের পর ৫টি প্রস্তাবণা জেলা কার্যালয়ে প্রেরণ করেছেন।

এগুলো হলো-নিষেধাজ্ঞা ৬৫ দিন হতে কমিয়ে এনে ৩০ দিন করা, নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলেকে খাদ্য সহায়তা দেয়া, সরকারি তত্বাবধানে নিষেধাজ্ঞাকালীন মৎস্যজীবীদের বিকল্প কর্মসস্থানের ব্যবস্থা করা, বাংলাদেশের জলসীমায় বিদের্শী ফিশিং বোটের অবৈধ অনুপ্রবেশ কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, দেশীয় বোটসমূহকে ২০/২২ অশ্ব ক্ষমতা সম্পন্ন ডেইলি ফিশিং এর সুযোগ দেয়া।

তিনি আরো বলেন, ২০১৭ সালে জুনে জেলে নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হয়। পরবর্তীতে জেলেরা বোটে কাজ করলেও প্রায় ৩-৪ হাজার শ্রমিক নিবন্ধন হতে পারেনি। সরকারি ঘোষণার চাল কখন পাওয়া যাবে তা তিনি সঠিক জানাতে পারেননি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ১৫ হাজার, কুতুবদিয়ায়, দিশেহারা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন