খাগড়াছড়িতে কারারক্ষীদের হাতে জেলার অবরুদ্ধ, তিন ঘন্টা পর উদ্ধার

নানা দূর্নীতি, অনিয়ম, টাকার জন্য সাধারণ কারারক্ষী এবং বন্দী আসামিদের নানান মানসিক অত্যাচার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের জেলার আক্তার হোসেন শেখ কে তার অফিস কক্ষে প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে কারারক্ষীরা।এ সময় কয়েকজন কারারক্ষীকে বলতে শোনা যায় আইজি প্রিজন এসে জেলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হবে। এ সময় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড় টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাকে অরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে খবর পেয়ে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. শাহীন আলম এসে কাররক্ষী নাছির উদ্দীনকে নিরস্ত্র করেন।এরপর খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান মারুফ এসে কারারক্ষীদের নিয়ে বসে অভিযোগ শুনে জেলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।কারারক্ষী নাছির উদ্দীন ও আব্দুস সালাম বলেন, 'খাগড়াছড়ি জেল সুপার আক্তার হোসেন শেখ সাধারণ কারারক্ষী এবং বন্দী আসামিদের নানান মানসিক অত্যাচার করতেন। যেকোনো কাজের জন্য আমাদের থেকে টাকা দিতে হতো। টাকা ছাড়া তিনি কিছুই বুঝতো না। এসব বিষয় নিয়ে একবার আসামিরা জেলারকে ভিতরে আক্রমণের চেষ্টা করে।পরে আমরা দ্রæত জেলারকে নিরাপত্তা প্রদান করি। এছাড়াও গতবছর জেলারের অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ হলে করলে তা তদন্ত হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইতোমধ্যে তাকে ওএসডি করে বদলি আদেশ হয়। আজ বৃহস্পতবার খাগড়াছড়ি ত্যাগ করার কথা। কিন্তু আজ হঠাৎ করে কোনও কারণ ছাড়াই তিনি আমাদের কয়েকজনকে রাজশাহী বদলি করে দেন।'খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক বাপ্পি দাশ বলেন, 'এই জেলার আক্তার হোসেন শেখ'র বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। গত জুলাই আন্দোলনে গ্রেফতার হয়ে জেলে আসলে জেলার তার কাছ থেকে আমাকে মানসিকভাবে টর্চার করে দের ফুট জায়গার জন্য ৮-৯ দিনে ৪৬ হাজার টাকা আদায় করে।আব্দুল করিম অভিযোগ, 'একটা পারিবারিক মামলায় ২০২৪ সালে আমি ২ মাস ৫দিন কারাগারে ছিলাম। তখন ১০-১৫ হাজার টাকা দিয়ে কারাগারে ভিতরে থাকতে হয়েছে। না হলে অত্যাচার, মারধর করা হয়। এটা ভিতরে নিত্যদিনের ঘটনা, এটা প্রতিনিয়ত চলে।'খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. শাহীন আলম বলেন, 'কারারক্ষীদের নিকট থেকে বিষয়টি শুনে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করব। আসলে বিষয়টি কোন সমস্যা না, নিজেদের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।উনার বদলি হয়েছে সুতরাং উনি স্বাভাবিকভাবে এখান থেকে যেতে পারবেন।'বিকালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জেলার আক্তার হোসেন শেখ কারাগার ত্যাগ তার নতুন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে চলে যান।
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন