ঘূর্ণিঝড় বুলবুল: সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের বিকেলে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে বন্ধ থাকা দেশের বিমান ও ফেরি গতকাল রোববার (১০ নভেম্বর) থেকে চলাচল করলেও লঞ্চ, মাছ ধরা নৌকা-ট্রলার চলাচল করতে পারেনি ৩ নং সতর্কতা সংকেত বলবৎ থাকার কারণে। যার ফলে সেন্টমর্টিন থেকে আটকেপড়া পর্যটকরা ফিরতে পারেনি। তবে সকালে দুইটি জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে টেকনাফে দমদমিয়া ঘাট ছেড়ে যায়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আটকে পড়া পর্যটকরা বিকেলেই টেকনাফে পৌঁছাবে বলে জানা গেছে।
সোমবার (১১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া (জাহাজ ঘাট) হতে এলসিটি কুতুব দিয়া ও কেয়ারীক্রুজ ডাইনিং যাত্রী ব্যতীত সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে স্থানীয় সতর্কতা সংকেত পড়লে টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে গত ৮ অক্টোবর থেকে সেন্টমার্টিনে প্রায় ১২ শ পর্যটক আটকা পড়ে। উদ্বেগ উৎকন্ঠায় ছিলো আটকে পড়া পর্যটকদের অনেকেই। তিন দিন পরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় আটকে পড়া পর্যটকদের ফেরাতে সকালে ওই জাহাজ দুটি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান, আটকা পড়া পর্যকটকদের ফিরিয়ে নিতে ইতিমধ্যে দুটি জাহাজ টেকনাফ দমদমিয়া ঘাট ছেড়েছে। তিনি আরো বলেন, তিনদিন পর্যন্ত পর্যটকদের যাবতীয় সুযোগ সুবিধার দেখভাল করা হয়েছে।
সেন্টমার্টিনের কিংশুক ইকো রিসোর্চ প্রোপ্রাইটর সরওয়ার কামাল জানান, তার হোটেলে প্রায় শতাধিক পর্যটক রয়েছে। তিনদিন ধরে তাদের থাকা খাওয়া সম্পূর্ণ ফ্রি করা দেয়া হয়েছে। এটি মানবিক কারণে করা হয়েছে । তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেন্টমার্টিনের পর্যটন ব্যবসায়ীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিতাস গ্যাস এলাকার মেডিক্যাল অফিসার ডা. আব্দুর রউফ রনি জানান, ৩ সদস্য নিয়ে সেন্টমার্টিনের ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আসলে ঘুর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে হয়েছে। তিন দিন পর্যন্ত সুযোগ সুবিধা প্রদান করেন কিংশুক রিসোর্টের কর্তৃপক্ষ।
কেয়ারি সিন্দাবাদের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, কোনো যাত্রী ছাড়া সাড়ে ৯ টার দিকে দুইটি জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। আশা করছি বিকেলের মধ্যে ফিরবেন আটকেপড়া পর্যটকরা।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসনের নির্দেশমতে দুইটি জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে। যাতে পর্যটকরা নিরাপদে ফিরতে পারেন।
আটলান্টিক ক্রুজের কক্সবাজারস্থ ইনচার্জ নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ও আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সোমবার (১১ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় দমদমিয়া ঘাট থেকে রওয়ানা দেয় জাহাজ। আটকে পড়া পর্যটকরা আমাদের বুকিং করা যাত্রী না হলেও মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা সেবার উদ্যোশ্যে যাত্রীসেবা দিচ্ছি। যেহেতু আমাদের জাহাজ বড় এবং সেন্টমার্টিন ঘাটে সহজেই ভিড়তে পারে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সাইফুল ইসলাম জানান-সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকের ব্যাপারে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হয়েছে। সোমবার আবহাওয়া পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় তাদেরকে জাহাজে করে টেকনাফে নিয়ে আনা হচ্ছে।
কক্সবাজারের সহকারি আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান জানান, সকল সতর্কতা সংকেত তুলে নেয়া হয়েছে। সকল ধরণের নৌ যান চলাচল করতে পারবে।