টিআর-কাবিটায় মহেশখালীর স্বামীহারা জকিয়া বেগমের স্বপ্ন পূরণ
গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূচির বিশেষ বরাদ্দের অর্থ দিয়ে তৈরি গৃহহীন মানুষের জন্য দেয়া একটি নতুন বাড়ি পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে মহেশখালীর স্বামীহারা জকিয়া বেগমের।
উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের জাগিরাঘোনা গ্রামের স্বামীহারা জকিয়া বেগম। তিনি ২ কন্যা সন্তানের মা। বিগত ৫ বছর পূর্বে তাকে তালাক দিয়ে দেন তার স্বামী সফিউল ইসলাম। তারপর থেকে অভাব, অনটনে মানুষের বাসায় কাজ করে তার সংসার চালিয়ে কোন রকমে দুই কন্যা সন্তানকে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে নিজের মাথা গুজার ঠাঁই ছিলোনা একটুও। বাপের বাড়িতে থাকা যে ঘরে তিনি ছিলেন সেই ঘরটি ছনের খড় ও ঝরাজিন্ন বাশেঁর বেড়া দিয়ে কোন রকমের দিন জীবন যাপন করছিলো। একটি ঘরের কারণে তাদের বহু দিনের স্বপ্ন ছিলো অবশেষে সেই স্বপ্নের ঠিকানা খুঁজে দিলেন স্থানীয় সাংসদ আলহাজ আশেক উল্লাহ রফিক।
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া একটি ঘরের মালিক জকিয়া বেগম। নতুন বাড়ি পাওয়া জকিয়া বেগম জানান, জীবনেও ভাবিনি আমি দালাল কোঠার ঘর পাবো আমার মেয়েদের পড়ালেখা করার জন্য সুরক্ষিত একটি রুম পাবো , আজ প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে আমি আমার স্বপ্ন পুরণ করতে পেরেছি। তায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আমার এলাকার এমপি আশেক উল্লাহ রফিককে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
জানা গেছে, মহেশখালী উপজেলায় ১৭ জন দরিদ্রদের মাঝে এই রকম দূর্যোগ সহনীয় বাড়ি প্রদান করা হয়েছে। ঘরের নামফলকে লেখা থাকবে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান/টিআর-কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
সুত্রে জানা গেছে , আগামী পাঁচ বছরে টিআর ও কাবিটার বিশেষ বরাদ্দের তিন হাজার কোটি টাকা দিয়ে দরিদ্রদের এক লাখ ২৫ হাজার নতুন ঘর তৈরি করে দেবে সরকার। কোন কোন শর্তে ঘর দেয়া হবে সে জন্য একটি নির্দেশিকাও করেছে মন্ত্রণালয়। মহেশখালী উপজেলায় ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭টি ঘর দেয়া হচ্ছে পর্যায়ক্রমে আরো দেয়া হবে প্রতিটি ইউনিয়নের হত দরিদ্রদের মাঝে।
মহেশখালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৫০০ বর্গফুটের প্রতিটি ঘরে থাকবে দুটি কক্ষ, একটি করিডোর, একটি বাথরুম ও একটি রান্নাঘর। দুর্যোগ সহনীয় এসব ঘর হবে টেকসই এবং প্রতিটি ঘরেই থাকবে সোলার সিস্টেম আর বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
মহেশখালী কুতুবদিয়ার সাংসদ আলহাজ আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মানে দরিদ্র মানুষের উন্নয়ন। দেশে কেউ গৃহহীন থাকবেনা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ি প্রতিটি গৃহহীনকে মানুষকে খুঁজে বের করে তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। আমার উপজেলায় প্রথম ধাপে ১৭টি এবং ২য় ধাপে আরো ৩০টি ঘর দেয়া হবে।
উপজেলা প্রকল্প অফিস সুত্রে জানা গেছে, নির্দেশিকা অনুযায়ি ডিসিসহ সংশ্লিষ্টরা সুবিধাভোগীদের নির্বাচন করে থাকেন। কারও এক বা দুই শতাংশ জায়গা আছে কিন্তু ঘর নেই, বা ঘর আছে কিন্তু তা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। তাদের এই ঘর দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যে পরিবারে পুরুষ সদস্য নেই বা পুরুষ সদস্য আছে কিন্তু তার বয়স ৬৫ বছরের ওপর; নদীভাঙনে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন তাদের মুলত এই ঘর দেয়া হচ্ছে।