দল ও জনবান্ধব নেতৃত্ব চায় টেকনাফ উপজেলা বিএনপি

fec-image

১ জুলাই, শুক্রবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি টেকনাফ উপজেলার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল। ইতোমধ্যে সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। সম্মেলন ঘিরে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা। থেমে নেই চা-আড্ডা। সমানতালে চলছে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা।

প্রথম অধিবেশনে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন এবং দ্বিতীয় অধিবেশন কাউন্সিলে হবে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন। দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক মৌলিক দুইটি পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য অনেকের নাম আলোচনায় ওঠে এসেছে।

তবে সম্মেলন শেষে গঠনতন্ত্র মেনেই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছে কাউন্সিলর ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থেকেও যারা জেল-জুলুমের শিকার হয়ে দলকে আকড়ে ধরেছেন; কর্মীদের পাশে আছেন, এমন নেতারাই কমিটিতে আসুক-সেটি প্রত্যাশা সবার।

বিএনপির একটি সূত্র বার্তা দিল, এডভোকেট মুহাম্মদ হাছান সিদ্দিকী ও মো. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিটির সাথে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল্লাহর মধ্যকার দীর্ঘদিনের কোন্দল নিরসন হয়েছে। দূরত্বের শীসা গলেছে। সুষ্ঠু সম্মেলন ও যোগ্য নেতৃত্ব উপহার দিতে তারা একমত। এটি দলের এই দুঃসময়ে বিরাট সুসংবাদ মনে করছে নেতাকর্মীরা।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেলো, এবারের কাউন্সিলে সভাপতির আলোচনায় রয়েছেন- উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট মুহাম্মদ হাছান সিদ্দিকী, সহসভাপতি মো. হাশেম সিআইপি, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল্লাহ এবং সাবেক সদস্য সচিব ও জেলা বিএনপির সদস্য রাশেদুল করিম মার্কিন।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে বর্তমান কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী মেম্বার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট সলিমুল মোস্তফা আলোচনায় আছেন।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, শাহপরীর দ্বীপ বিএনপির সভাপতি মো. ইসমাইল মেম্বার, বাহারছড়া দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি ছৈয়দ হোছাইন মেম্বার, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক উসমান গনি, সাবেক ছাত্রনেতা মো. রাসেলের নাম শোনা যাচ্ছে।

বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মীদের ফেসবুকে স্ট্যাটাস সূত্রে জানা গেছে, সভাপতি পদে নানা কারণে আলোচনায় রাশেদুল করিম মার্কিন। শুধু বিএনপি করার অপরাধে তিনি একেএকে ৩৫টি মামলার আসামি। বোঝাপড়া ও আঁতাতের রাজনীতি করেন নি। তাই কারাগার যেন তার বাড়ি।

রাশেদুল করিম মার্কিন ১৯৮৮ সাল থেকে এখনো রাজনীতিতে সক্রিয়। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথের সৈনিক। একটি সেকেন্ডের জন্যও মাঠ ছাড়েন নি। আকড়ে ধরেছেন নেতাকর্মীদের‌। দলের জন্য তিনি নিরাপদ ব্যক্তি।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য মো. হাশেম ‌সিআইপি ও মোহাম্মদ আলী মেম্বার জোটবদ্ধ প্রচারণা চালাচ্ছেন। সবার দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। সমর্থন চাচ্ছেন। তৃণমূলে একটি অবস্থান করে নিয়েছেন তারা। অতীত ভুলে দলীয় কোন্দলের বাইরে থাকতে পারলে মো. আবদুল্লাহর বিকল্প নেই।

বর্তমান কমিটির সভাপতি এডভোকেট মুহাম্মদ হাছান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেনের ব্যক্তিগত ইমেজ, দল পরিচালন দক্ষতা ও সক্ষমতাকে বিবেচনায় আনছেন কাউন্সিলররা।

তবে অনেকে মনে করছে, উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর পছন্দ ও ইশারাতেই হবে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্তিশালী ও আন্দোলনমুখী কমিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাজপথে ভূমিকা রাখতে পারে এমন কমিটি চায় বিএনপির তৃণমূল।

গত ৭ মে উপজেলাা বিএনপির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জেলা সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী প্রধান অতিথি ছিলেন। সভায় অনেকেই ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ তুলেন। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে শক্তিশালী কমিটির উপর গুরুত্বারোপ করেন শাহজাহান চৌধুরী। সেদিকেই সবার নজর এখন।

দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামত নিয়ে নিরেপক্ষ কাউন্সিলের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ঘোষণা দিয়েছেন শাহজাহান চৌধুরী। তার এই ঘোষণাতেই আমরা আশান্বিত। সেভাবে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ক্যাম্পেইন চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন