দায়িত্বশীল সমাধানের লক্ষ্যে ভারত -পাকিস্তানকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

fec-image

ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা কমিয়ে আনতে ভারত ও পাকিস্তানকে একে অপরের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

গত সপ্তাহে ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বেসামরিক পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে নয়া দিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে উত্তেজনা এখন চরমে। তার মধ্যে বুধবার রুবিও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে ফোন করে এ আহ্বান জানান।

তিনি উগ্রবাদ মোকাবেলায় ভারতের লড়াইয়ে সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং পাকিস্তানকে পেহেলগামে হামলার তদন্তে সহায়তা করতে অনুরোধ করেছেন বলে রুবিওর ফোনের পর জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে দৃশ্যত এটিই যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকে প্রথম কোনো কূটনৈতিক তৎপরতা, বলছে বিবিসি।

চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র পাকিস্তানও, তবে ২০২১ সালে প্রতিবেশী আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর ওয়াশিংটনের কাছে ইসলামাবাদের গুরুত্ব অনেকটাই কমে গেছে।

জয়শঙ্কর, শাহবাজকে রুবিওর ফোনের পর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে কাশ্মীরে হামলাকে ‘সন্ত্রাস’ ও ‘বিবেকহীন’ অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

রুবিও পাকিস্তানকে এ হামলার ‘নিন্দা জানানোর প্রয়োজনীয়তা’ সম্পর্কেও বলেছেন, জানিয়েছে তারা।

মন্ত্রী এ ‘বিবেকহীন’ হামলার তদন্তে সহায়তা করতে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, বলেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ভারত যেন ‘উত্তেজনাকর ভাষার ব্যবহার কমায়’ সে আহ্বান জানাতে রুবিওর প্রতি অনুরোধ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, জানিয়েছে শাহবাজ শরিফের কার্যালয়।

‘উত্তেজনা কমাতে, সরাসরি যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও শান্তি বজায় রাখতে’ রুবিও পারমাণবিক শক্তিধর দুই দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীকে একে অপরের সঙ্গে কাজ করতেও আহ্বান জানিয়েছেন।

একটি ‘দায়িত্বশীল সমাধানের’ লক্ষ্যে ভারত ও পাকিস্তানকে একসঙ্গে কাজ করতে বলার পাশাপাশি ওয়াশিংটন অন্য দেশগুলোর প্রতিও নয়া দিল্লি-ইসলামাবাদ উত্তেজনা নিরসনে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছে।

পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র তার নিন্দা জানিয়েছে, তবে সেখানে পাকিস্তানের সমালোচনা করেনি তারা।

ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ বলছে তাদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততাই নেই; তারা উল্টো এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করলেও দুই দেশই অঞ্চলটির পৃথক দুটি অংশ শাসন করছে। কাশ্মীরকে ঘিরে দেশ দুটির মধ্যে একাধিক যুদ্ধও হয়েছে।

গত সপ্তাহে পেহেলগামে ওই সন্ত্রাসী হামলার পর নয়া দিল্লি পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা কয়েক দশক পুরনো একটি পানিবন্টন চুক্তি স্থগিত ঘোষণা করে। দুই দেশ একে অপরের বিমানের জন্য আকাশসীমাও বন্ধ করে দিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরে সীমান্তে উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়েরও খবর পাওয়া যাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন