পাকুয়াখালীতে নির্মম ও অমানবিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে- শেখ হাসিনা

fec-image

রাঙ্গামাটির পাকুয়াখালীতে ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সংঘটিত ৩৫ জন বাঙালি কাঠুরিয়া হত্যাকাণ্ডকে নির্মম ও অমানবিক হত্যাকাণ্ড বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অরদিকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভানেত্রীত্বে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে ঘটনা তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্যও বলা হয়েছে।

কূটনৈতিক সংবাদদাতার বরাত দিয়ে ১৯৯৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে নির্মম ও অমানবিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে- শেখ হাসিনা’ শিরোনামে দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অমানবিক ঘটনা ঘটেছে, ২৮ জন (পাকুয়াখালীতে ৩৫ কাঠুরিয়াকে হত্যা করা হয়েছিল, তবে ২৮ জনের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল।) কাঠুরিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, এটা সত্যিই খুব দুর্ভাগ্যজনক। আমরা যখন শান্তির জন্য চেষ্টা করছি, আমরা যখন দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছি, তখন এ জাতীয় ঘটনা কেন ঘটনানো হচ্ছে, এর পেছনে কোন দুরভিসন্ধি আছে কিনা তা দেখতে হবে। চীনে ৫ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে রওয়ানা হওয়ার আগে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রাক-সফর বক্তব্য পেশকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।’

‘(বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬) বিদেশ যাত্রায় রওয়ানা দেবার আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের এই নির্মম ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে যে অশান্তি চলছে, যথাশীঘ্র সম্ভব এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে এবং সেখানে যাতে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়, শান্তি ফিরে আসে, পার্বত্যবাসীদের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয় তার জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালাব।’

‘প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য, সন্ত্রাস দমনের জন্য, উন্নয়নের জন্য গৃহীত প্রচেষ্টাকে বানচাল করার জন্য এ ধরনের সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানো হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন থেকে এ ধরনের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত এবং দুঃখজনক। নিহতদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে এবং তাদের পরিবরবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই দুঃখজনক ঘটনার খবর পাওয়ার সাথে সাথে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।’

‘প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আমরা পার্লামেন্টারি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। কমিটি দুর্ঘটনার ব্যাপারে সার্বিক তদন্ত করবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানের জন্যও এই কমিটি কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর দুরভিসন্ধি থাকতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নিতি নির্দেশ দিয়েছেন।’

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ দৈনিক ইনকিলাবে ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি মণ্ডলীর সভা: রাঙ্গামাটির দুঃখজনক দুর্ঘটনায় গভীর উদ্বেগ’ শীর্ষক সংবাদ থেকে জানা যায়, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি মণ্ডলীর সভা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভানেত্রীত্বে গতকাল (বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬) অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রাঙ্গামাটিতে সংঘটিত দুঃখজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে রাঙ্গামাটির ঘটনা তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় এবং নিহত ব্যক্তিদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।’

সূত্র: ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬, দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত সংবাদ 

পাকুয়াখালী হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে ক্লিক করুন:

পার্বত্য চট্টগ্রামের নৃশংসতম গণহত্যা পাকুয়াখালী ট্রাজেডি

পাকুয়াখালী থেকে একমাত্র বেঁচে ফিরে আসা ইউনুছ মিয়ার সাক্ষাৎকার

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কাঠুরিয়া হত্যা, পাকুয়াখালীা ট্র্যাজেডি, পাকুয়াখাী গণহত্যা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন