প্রান্তিক লেকের সৌন্দর্য বর্ধনকাজ উদ্বোধন
চারদিকে পাহাড় ও সবুজের আড়ালে বুকে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র প্রান্তিক লেক। গাছ-গাছালিতে ঘেরা লেকে ঘুরে এই যেন উপভোগ করে যে কেউ মনে প্রশান্তি সুখ আনবে। পাহাড়ের মাঝখানে বিস্তীর্ণ জুড়ে লেকের জলের রাশি। সুনশান নীরবতা, হরেক রকমের পাখির কলকাকলি এবং নানা প্রজাতির সবুজ গাছগাছালিতে ভরপুর প্রান্তিক লেক দর্শনীয় স্থানটি প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে উপভোগের মনোরম পরিবেশ। দূরদূরান্ত থেকে বেড়াতে আসা ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে এই পর্যটন কেন্দ্রটি। তাছাড়া এই যেন নতুন আঁকা তুলিতে সেজেছে প্রান্তিক লেক।
বান্দরবান শহর ও কেরানীহাট থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান পর্যটন কেন্দ্র প্রান্তিক লেক। সদর উপজেলা সুয়ালক ইউনিয়নে ২৫ একর জুড়ে গড়ে উঠেছে এই লেকটি। চারিপাশে রয়েছে ছোট্ট ছোট্ট পাহাড় ও গাছ-গাছালিতে ঘেরা সবুজের সমারোহ। এই কেন্দ্রে বনভোজন কিংবা সময় কাটানো আড্ডা মুহূর্ত সময় কেটে যাবে নিমিষে। শুধু কি তাই পানি উপর বটে চড়িয়ে মধ্যখানে বসে আড্ডা মুহূর্ত যেন অন্যরকম মনোরম দৃশ্য। চারিপাশে শুধু থইথই পানি। লেকে মাছ শিকারের ব্যবস্থাও ও লেকের পাড়ে রাতে টাবু টাঙ্গিয়ে ক্যাম্পিংয়ের জন্য এটি মনোরম জায়গা।
এদিকে গতকাল বিকালে নতুন আঙ্গিণে গড়ে তোলা পর্যটক কেন্দ্র প্রান্তিক লেক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। উদ্বোধনে অংশ নেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক,সদর উপজেলা ভূমি ও নির্বাহী অফিসারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। শেষে পর্যটন কেন্দ্র লেকে পরিদর্শন করেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রশাসন তথ্য মতে, বান্দরবান সদর উপজেলার সূয়ালক ইউনিয়নের হলুদিয়া-ভাগ্যকুল সড়কে পাহাড় আর অরণ্যেঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় প্রান্তিক লেক পর্যটন স্পটের আয়তন ৬৫ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। দীর্ঘ এগারো বছর আগে ২০১৩ সালে সরকার এটিকে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে।পরবর্তীতে প্রায় ২৫ একর আয়তনের প্রাকৃতিক জলাশয়ের উপর গড়ে তোলে পর্যটন কেন্দ্র।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বান্দরবান সদর উপজেলার সূয়ালক ইউনিয়নের হলুদিয়া- ভাগ্যকুল সড়কে পাশে অবস্থিত পর্যটন কেন্দ্র প্রান্তিক লেক। প্রবেশ মূল্যে নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা। বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালিতে ভরপুর ও ছোট ছোট পাহাড়ের মাঝখানে একটি লেক। লেকের পাশে সাজিয়ে রেখেছে উন্মুক্ত মঞ্চ, পিকনিক স্পট, বিশ্রামাগার, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, নেপাল থেকে আমদানি করা ট্রি-টপ অ্যাডভেঞ্চার, জিপ-লাইন ট্রলি (জিপলাইনার), কিডস কর্নার, লেকের জলে ঘুরে বেড়াতে পর্যটকদের জন্য সৌরবিদ্যুৎ-চালিত সুন্দর বোট। এছাড়াও শিশুদের জন্য রয়েছে খেলার স্থান এবং ট্রি টপ অবস্টাকল। এমন মনোরম পরিবেশে যে কেউ হারিয়ে যাবে নিমিষে।
প্রান্তিক লেক টিকেট কাউন্টার ম্যানেজার কনক বলেন, প্রতিদিন এখানে স্থানীয় পর্যটকদের আগমন ঘটে। তাছাড়া এখন নতুন আঙ্গিকে রূপে সাজানো হয়েছে আশা করছি দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকদের আগমন আরো বাড়বে।
এ বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য লীলাভূমি একটি জেলা বান্দরবান। পর্যটন শিল্পের বিকাশে প্রান্তিক লেক পর্যটন স্পটটি আরও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হয়েছে। ভ্রমণপিপাসুদের সুবিধার্থে এখানে নেপাল থেকে আমদানি করা অ্যাডভেঞ্চার ট্রি-টপ, জিপ-লাইন ট্রলি (জিপলাইনার) এবং শিশুদের জন্য কিডস কর্নার করা হয়েছে।প্রকৃতির নির্মল বাতাস, পাখির কিচিরমিচির আওয়াজে প্রাণজুড়ানো স্থানটি পিকনিক ও যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত একটি দর্শনীয় স্পট।