বদির কন্যার রাজকীয় বিয়েতে ৩৫ হাজার অতিথি! ৪৪০ গরু মহিষ-ছাগল জবাই
কক্সবাজার-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির একমাত্র মেয়ে ও বেসরকরি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সামিয়া রহমান সানির রাজকীয় বিয়ে মহা ধুমধামে সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার বাড়িতে বিবাহোত্তর সংবর্ধনায় প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের জন্য খাবারের আয়োজন হয়।
এ খাবারের জন্য জবাই করা হয় প্রায় ৪০০ ছাগল, ৩২ টি গরু ও ৬ থেকে ৮টি মহিষ। সকাল ১১ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খাবারের আয়োজন চলে। বিয়েতে খাবারের জন্য পাঁচটি প্যান্ডেল করা হয়। প্রতি ব্যাচে প্রায় এক হাজার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়। পুরো আয়োজনকে সিসি ক্যামরার আওতায় আনা হয়। আমন্ত্রিত ও স্থানীয় দলীয় লোকজনের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ দিকে উখিয়া যুবলীগকে দাওয়াত পাওয়ায় খাবার দাবারের পাল্টা একটি প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়।
জানা যায়, রাজকীয় এ বিয়ের জন্য সপ্তাহ ধরে শুধু মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরি এবং সাজসজ্জার কাজ করা হয়। অনুষ্ঠানের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে সাজসজ্জার সরঞ্জামাদি আনা হয়। আয়োজনের তদারকি করেন আবদুর রহমান বদি। টেকনাফের ইতিহাসে এমন বিয়ে আর হয়নি বলে জানান তারা।
আয়োজনে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জানান, মূল ফটক থেকে বর-কনের মঞ্চ, খাবারের প্যান্ডেল পর্যন্ত অপূর্ব কারু কাজ ছিল। আয়োজন ঘিরে টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার এমপি শাহীন আক্তার চৌধুরী ও আবদুর রহমান বদির বাড়ির আঙিনা অভিজাত সাজে সাজানো হয়।
এ বিষয়ে সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির ব্যক্তিগত সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন বলেন, বর নেত্রকোনার জয়নগরের ঐতিহ্যবাহী বুনিয়াদি পরিবারের মনোয়ারা ম্যানশনের সুরত আলী ও বেগম মনোয়ারা আক্তারের ছেলে ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দীন। সামিয়া রহমান সানির সঙ্গে ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দীনের প্রায় নয় মাস আগে আকদ সম্পন্ন হয়। আবদুর রহমান বদি ও শাহীন আক্তার চৌধুরীর মেয়ে সামিয়া রহমান সানি বর্তমানে ঢাকার লন্ডন ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজে অনার্স তৃতীয় সেমিস্টারে পড়েন।
এদিকে আবদুর রহমান বদির একমাত্র মেয়ের বিয়ে নিয়েও রাজনীতিকরণ করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন উখিয়া-টেকনাফ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, বদি মেয়ের বিয়ে নিয়েও সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি কেবল তার অনুসারী হিসেবে পরিচিতদের মেয়ের বিয়েতে দাওয়াত দিয়েছেন। বিয়েতে নিমন্ত্রণ না পেয়ে অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
উখিয়া উপজেলা যুবলীগ পাল্টা আয়োজন হিসেবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ভোজের আয়োজন করেছে। নেতাকর্মীরা চাঁদা তুলে এ আয়োজন করেছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন। তার মতে, আবদুুর রহমান বদির দু’টি সংসদ সদস্য নির্বাচন ও বদিপত্নী শাহীন আকতার চৌধুরীর একটি সংসদ সদস্য নির্বাচনে যুবলীগের নেতাকর্মীরা জানবাজি রেখে কাজ করলেও মেয়ের বিয়েতে যুবলীগকে মূল্যায়ন করেনি। এ নিয়ে যুবলীগের নেতাকর্মীরা চরম ক্ষুব্ধ ও অসন্তুষ্ট। দাওয়াত বঞ্চিত ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা নিজেরা চাঁদা তুলে ভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। তিনি আরও জানান, নেতাকর্মীরা নৌকার জন্য ব্যানার পোস্টার লাগিয়ে রাজপথে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এমন কর্মী ওই দুই এমপির দাওয়াত বঞ্চিত করায় সত্যি দুঃখজনক।