মহেশখালীতে পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
মহেশখালী উপজেলার কালারমার ছড়া ইউনিয়নে নোনাছড়ি বাজারে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের একজন এএসআই এর ধারাবাহিক হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তারা এ অবস্থার দ্রুত প্রতিকারের দাবি জানান। রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কালারমার ছড়া ইউনিয়নের নোনাছড়ি বাজার জমিদার ব্যবসায়ী সমিতির আয়োজনে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়।
সমিতির সভাপতি মঞ্জুর আলম সুজনের সভাপতিত্বে ও অর্থ সম্পাদক আব্দুস সত্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির নেতা ও স্থানীয় যুবলীগের অর্থ সম্পাদক জামাল হোসেন, যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শামসুল আলম, ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মোহাম্মদ জয়নাল ও আহসানুল হকসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা।
এ সময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন -গত বছরের ২১ অক্টোবর মহেশখালীতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও র্যাবের ডিজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পন করা অনেক সন্ত্রাসী বর্তমানে এলাকায় ফিরে এসে ফের অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। এরা স্থানীয় একটি প্রভাবশালী গ্রুপের পক্ষ হয়ে কাজ করে।
বক্তাদের অভিযোগ -সম্প্রতি কালারমার ছড়া পুলিশ ক্যাম্পে যোগদান করা এএসআই মোহাম্মদ জাহাঙ্গিরের নেতৃত্বে হাবিলদার মোঃ হাসান ও দুই পুলিশ কনস্টেবল ওই প্রভাবশালী গ্রুপের কাছে অবৈধভাবে ম্যানেজ হয়ে স্থানীয় এ ব্যস্ততম ঐতিহ্যাবহি নোনাছড়ি বাজারে অব্যহত ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে। বাজারটিকে ব্যবসায়িক ভাবে পিছিয়ে দিতে অহেতুক মহড়া চালিয়ে আতংক সৃষ্টি করে। সম্প্রতি বাজারের মুদি দোকানদার ও মুরগী ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নানকে গ্রেফতার করতে এসে ব্যবসায়ীদেরকে দীর্ঘ সময় ধরে অহেতুক হয়রানি করা হয়।
হান্নান ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি। তাছাড়া এর আগেও ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আবু বক্করকে গ্রেফতার করার নামে একই কায়দায় ত্রাস সৃষ্টি ও হয়রানি করা হয়। তাদের অভিযোগ-কালারমার ছাড়া বাজার এলাকায় একাধিক সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও তাদের ধরতে কোনো প্রকার অভিযান চালানো হয় না। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ এ দাগি আসামিদের সাথে নিয়ে কখনও মুখোশ পড়িয়ে কখনোবা প্রকাশ্যে এনে অভিযান চালায়। ইতোমধ্যে আত্মসমর্পনের আসামি লোকমানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলেও তাদের গ্রেফতারে কোনো অভিযান নেই।
অভিযোগ করা হয়-সন্ত্রাসী জমির, রশিদ মিয়া, সরওয়ার, কালা জাহাঙ্গির ও সেলিম প্রকাশ কালামিয়াসহ অসংখ্য দাগি আসামি প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করে বেড়াচ্ছে। তাদের সাথে এএসআই জাহাঙ্গিরের সখ্যতা থাকায় তারা প্রকাশ্যে ত্রাস সৃষ্টি করে চলছে। তাদের সাথেই আড্ডা দিতে দেখা যায়। বাজারে আতংক সৃষ্টির পাশাপাশি নিরীহ চাষিদের চিংড়ি ঘেরে পর্যন্ত নিয়মিত মহড়া ও আতংক সৃষ্টি করে চলছে।
এছাড়া এ চার পুলিশ সদস্যের সহায়তায় ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রভাবশালী গ্রুপ স্থানীয় সাধারণ চাষিদের ৩টি চিংড়ি ঘের দখলে নিয়েছে বলেও তারা অভিযোগ তুলেন।
প্রতিপক্ষের কাছে ম্যানেজ হয়ে এএসআই জাহাঙ্গীরের এমন আচরণের প্রতিবাদ জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তারা দ্রুত এএসআই জাহাঙ্গীরকে প্রত্যহার করে নিয়ে এখানে নিরেপেক্ষ অন্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানান প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি।
রবিবার আছর নামাজের পর ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হন।