মাটিরাঙ্গায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতি


দেশের সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর ২০ শতাংশ বাড়ি ভাতা, ১ হাজার ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা বাস্তবায়নের দাবিতে দেশব্যাপী চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় সকল এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু হয়েছে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এ কর্মবিরতির ফলে মাটিরাঙ্গায় স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, “আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।” তারা আরও বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করে আসছি। আমাদের মূল দাবি ২০ শতাংশ বাড়ি ভাতা এবং মাসিক ১,৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা প্রদান নিশ্চিত করা।”
কর্মবিরতি পালনকালে শিক্ষকরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, দ্রুত তাদের দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেওয়া হোক।
স্থানীয় শিক্ষক সংগঠনগুলোও শিক্ষকদের এই আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে।
মাটিরাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাশেম বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ও ১ হাজার ৫শত টাকা চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। ন্যায্য দাবির স্বপক্ষে আমরা কর্মবিরতিতে রয়েছি। সরকারের উচিত দ্রুত আমাদের দাবি পূরণ করা।”
মাটি্রাঙ্গা ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী মো. সলিম উল্লাহ বলেন, “জীবনযাত্রার ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু আমাদের বেতন-ভাতা সেই অনুপাতে বাড়েনি। ২০% বাড়ি ভাড়া ও ১ ১ হাজার ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা আমাদের ন্যায্য দাবি। সরকার আমাদের দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত আমরা এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখব।”
মাটিরাঙ্গা মিউনিসিপ্যাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম বলেন,“শিক্ষকরা সমাজের মেরুদণ্ড। তাদের ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০% বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি অত্যন্ত যৌক্তিক। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত এই দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
শিক্ষকরা আরও জানান, দাবি আদায় না হলে পরবর্তী সময়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে শিক্ষক-কর্মচারীরা সর্বশেষ ১,০০০ টাকা বাড়ি ভাতা পাচ্ছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজীর নেতৃত্বে গত ১২ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। সেদিন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় ১৩ অক্টোবর থেকে সারাদেশের সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু হয়।

















