মিয়ানমারের জান্তা সরকার ২০২৫ সালে জাতীয় নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে
মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালে আয়োজনের পরিকল্পনা করছে ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। সামরিক বাহিনী সমর্থিত রাজনৈতিক দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির এক জ্যেষ্ঠ নেতা ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সেই নেতা এএফপিকে বলেন, ‘যদি বড় কোনো অঘটন না ঘটে, সেক্ষেত্রে আগামী ২০২৫ সালে নির্বাচন হতে পারে।’ জান্তা সমর্থিত অপর একটি রাজনৈতিক দলের প্রথম সারির এক নেতাও এএফপিকে একই তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে মঙ্গলবার মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ৩৬টি রাজনৈতিক দলকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে নির্বাচন কবে হবে— সে সংক্রান্ত কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি কমিশনের বিবৃতিতে।
মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং শনিবার রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারকে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, জনশুমারির মাধ্যমে জাতীয় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার পর নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ আরম্ভ হবে। ২০২৪ সালের পুরো বছর ধরে চলবে এই কাজ।
‘কেবল ভোটার তালিকা হালনাগাদ হলেই নির্বাচন সম্ভব,’ গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারকে বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য ইতোমধ্যে মন্তব্য করেছে যে মিয়ানমারে জান্তার তত্ত্বাবধানে যদি কোনো নির্বাচন হয় সেক্ষেত্রে তা হবে নির্বাচনের নামে ধোঁকাবাজি। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের মাধ্যমে জান্তা আসলে বিরোধীদের দমন করতে চাইছে।
সর্বশেষ ২০২০ সালের নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় পেয়ে সরকার গঠন করেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। অপরদিকে সামরিক বাহিনীর অভিযোগ ছিল— নির্বাচনে ভোটার তালিকা ও ভোটগ্রহণে কারচুপি হয়েছে।
সামরিক বাহিনী সমর্থিত বিভিন্ন দল নির্বাচন কমিশনে এ সম্পর্কিত অভিযোগও জানিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
কমিশন এ প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার পর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এনএলডি সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন; বর্তমানে যে মিলিটারি কাউন্সিল দেশটি শাসন করছে, সেই কাউন্সিলেরও প্রধান তিনি।
অভ্যুত্থানের রাতেই সুচিকে বন্দি করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে তাকে একটি বাড়িতে গৃহবন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছে। গত বছর তার দল এনএলডিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জান্তা নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কমিশন।