মেয়েরা যেসব কারণে ‘ব্যাড বয়’দের প্রেমে পড়ে

fec-image

প্রায়ই শোনা যায়, মেয়েরা তথাকথিত ব্যাড বয়দের প্রতি প্রবলভাবে আকৃষ্ট হয়। তারা চায় ভালো ছেলেদের সঙ্গে থাকতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খারাপ ছেলেদের প্রেমেই পড়ে। গ্রিন ফ্ল্যাগ ছেড়ে রেড ফ্ল্যাগের প্রতি মেয়েদের এই আকর্ষণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও দেখা যায় নানা হাস্যরসাত্মক পোস্ট। কিন্তু সুবোধ বালকদের ছেড়ে খারাপ ছেলেদের প্রতি মেয়েদের কেন এই আকর্ষণ?

অনেক সময় দেখা যায়, নার্সিসিস্ট, সাইকোপ্যাথ আর নানা নেতিবাচক মনোভাবের ছেলেদের ফ্যাশন সেন্স, ভাবভঙ্গি ও কথাবার্তা আলাদা রকমের নজরকাড়া হয়। তারা জানে নিজেদেরকে কীভাবে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়। সাম্প্রতিক ট্রেন্ড অনুযায়ী পোশাক বাছাই, হেয়ারস্টাইলসহ ফ্যাশনের সব ব্যাপারেই এরা মনোযোগী। আর এগুলো অনেক সময়ই আরোপিত বা মেকি হয়, ন্যাচারাল না। প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়তে বাধ্য হওয়ার ব্যাপারটি এখানে কাজ করে।

অনেক সময় আবার মেয়েদের মাঝে ‘এই ছেলেটিকে আমি আমার ভালোবাসা দিয়ে ভালো ছেলেতে পরিণত করব’ ধরনের অবাস্তব চিন্তা কাজ করে। আর নিষিদ্ধ বা নেতিবাচক যেকোনো কিছুর প্রতি আকর্ষণ তো মানুষের চিরাচরিতভাবেই বেশি।

বিভিন্ন গবেষণা বলছে, খারাপ ছেলে বা সমাজের ব্যাড বয়দের প্রতি মেয়েদের এই আকর্ষণের পেছনে কিছু কারণ রয়েছে।

১. ভালো ছেলেরা সহজে অনুমানযোগ্য
সবাই উত্তেজনা পছন্দ করে৷ ভালো ছেলেরা বাঁধাধরা নিয়মকানুন মেনে চলে বলে সহজেই অনুমান করা যায় তার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে। ওরা জানে কীভাবে সেই আগ্রহ আর কৌতুহল তৈরি করতে হয়। যে মেয়েরা অ্যাডভেঞ্চারাস বা উত্তেজনাময় জীবন চায়, তাঁরা ব্যাড বয়দের প্রেমে পড়ে দ্রুত।

২. ব্যাড বয়রা নিজেকে ঘিরে এক ধরণের ক্যারিশমা গড়ে তোলে
সবসময় নৈতিক আর ভালো কাজ করা ছেলেরা ঢাকঢোল পিটিয়ে সেগুলো প্রকাশ করে না। কখনো সেগুলো উদযাপন করার প্রয়োজন বোধ করে না। কিন্তু দেখানিপনায় বিশ্বাসী ছেলেরা নির্দিষ্ট কিছু ভালো কাজ করে আর সহজেই সকলের দৃষ্টি কাড়ে। নিজের চারপাশে ক্যারিশমা তৈরি করার এক চমৎকার গুণ আছে তাঁদের। মনে হয় যেন পৃথিবীটা তারই, সে এখানে রাজত্ব করছে। যেন সে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এই ক্যারিশমার প্রতি মুগ্ধতা তার আগের রূঢ় ব্যবহার ভুলিয়ে দেয়।কারণ, এটাও তাদের জানা যে কতটুকু মনোযোগ দিলে মানুষ তার পেছনে ঘুরঘুর করবে।

৩. ভালো ছেলেদেরকে পরিবর্তন করার চ্যালেঞ্জ নিতে হয় না
স্বভাবগতভাবেই মেয়েরা তার সঙ্গীর জীবনে নিজের প্রয়োজন অনুভব করতে চায়। বিপরীত মানুষটিকে সাহায্য করতে চায়। মেয়েরা জানে হয়তো এই ছেলেটি সঠিক পথে নেই, তাও সে বিশ্বাস করে ‘আমার ভালোবাসা দিয়ে আমি ওকে ভালো করে তুলব’। নাটকীয় মনে হলেও, মেয়েরা এই চ্যালেঞ্জটুকু নিতে পছন্দ করে। এমনকি কোনো অপরাধীর সঙ্গে সম্পর্কে থাকা অবস্থায়ও সে চায় মানুষটিকে সঠিক পথে নিয়ে আসার কারণ হবে সে।

৪. ব্যাড বয়রা কমিটমেন্ট বা প্রতিশ্রুতি চায় না
দুজন মানুষ যখন কাছে আসতে শুরু করে, তারা একে অপরের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে চায়। টক্সিক কোন লোকের সঙ্গে একটি নেতিবাচক অভিজ্ঞতার পর একটি মজার সময় কাটাতে অনেকে খারাপ ছেলেদের সঙ্গ বেছে নেয়। এক্ষেত্রে কমিটমেন্ট বা প্রতিশ্রুতির কিছু থাকে না।

৫. ব্যাড বয়দের প্রেমিকা হিসেবে আলোচনায় থাকা যায়
মানুষ চায় নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে, আলোচনায় থাকতে। বিশ্ববিদ্যালয় বা পাড়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী বা ত্রাস সৃষ্টি করা ছেলেটির প্রেমিকা হিসেবে এই লাইমলাইটে থাকার লোভ সামলাতে পারে না অনেক মেয়ে।

৬. ব্যাড বয়রা খারাপ ব্যবহারের ক্ষতিপূরণ দেয় সারপ্রাইজ আর উপহার দিয়ে
রাত দুপুরে বাড়ির নিচে এসে সরি বলার মতো স্টান্ট ধরণের সারপ্রাইজ দেওয়া এই ব্যাড বয়দের বৈশিষ্ট্য। আর তাতেই গলে যায় অনেক মেয়ে। এদিকে দামী আর দেখানোর মতো উপহার দিয়ে নিজের খারাপ আচরণের ক্ষতিপূরণ দেয় এ ধরনের ছেলেরা। উপহারের লোভে এমন ছেলেদেরকে পছন্দ করে অনেকে। শুনতে ভালো না লাগলেও এটি সত্য।

পরের বার আপনি যখন কারও প্রতি আকৃষ্ট হবেন, তখন এই কারণগুলো বিবেচনা করুন। একটি খারাপ ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো উত্তেজনাপূর্ণ কিন্তু সমানভাবে বিপজ্জনক। কারণ এ ধরনের সম্পর্কের স্থায়িত্ব কম। ভালো ছেলেদের সঙ্গে সম্পর্কে আপনি তুলনামূলক সুরক্ষিত। তবে প্রেম আসলে বলে-কয়ে আসে না। তাই আপনি যদি কোনো ব্যাড বয়ের প্রেমে পড়েই যান, তবে বুঝে-শুনে নিন পরবর্তী পদক্ষেপ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন