লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি, যেসব বিধিনিষেধ দেয়া হলো

fec-image

আগামীকাল (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সোমবার সকাল ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত এই লকডাউন কার্যকর থাকবে।

এই প্রজ্ঞাপনে মোট ১১টি বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
১. সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। গণপরিবহনের আওতায় রয়েছে সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট। তবে বিদেশগামী বা বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। পণ্য-পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা, জরুরী সেবাদান চালু থাকবে।

২. আইনশৃঙ্খলা, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, বন্দর সমূহের কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা সহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ তাদের কর্মচারী ও যানবাহন নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

৩. সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে তাদের প্রয়োজনীয় জনবল নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা নেয়ার ব্যবস্থা করতে পারবে। শিল্প কারখানা ও নির্মাণ কার্যাদি চালু থাকবে। শিল্প কারখানার শ্রমিকদের স্ব-স্ব কারখানা কর্তৃক নিজস্ব পরিবহনে আনা-নেয়া করতে হবে। বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ অন্তর্ভুক্ত কারখানা গুলিকে শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল চালু করতে হবে।

৪. ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ সৎকার ছাড়া অন্য কোন কাজে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।

৫. খাবারের দোকান ও হোটেল রেস্তোরায় কেবল খাদ্য বিক্রয় ও সরবরাহ করা যাবে। সেখানে বসে খাওয়া যাবে না।

৬. শপিং-মল সহ অন্যান্য সেবা সমূহ বন্ধ থাকবে। কিন্তু মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বা অনলাইনে অর্ডার নিয়ে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে। কেউ সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারবে না।

৭. কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে উন্মুক্ত স্থানে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।

৮. ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নেবে।

৯. সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের ব্যবস্থা নেবে।

১০. সারাদেশে জেলা ও মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন উপরের নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল জোরদার করবে।

১১. এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেখ হাসিনা যা বললেন
রবিবার দুপুরে সংসদ অধিবেশনে দেয়া ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, “করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এটি সামলাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”

আগে বয়স্করা সংক্রমিত হতো কিন্তু এখন তরুণ ও শিশুরা সবাই আক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে মানুষের কিছুটা সমস্যা হবে। কিন্তু তারপরও জীবনটা অনেক বড়। জীবনটা আগে। মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে”।

তিনিও কিছু নির্দেশনার কথা বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মাস্ক পড়তে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বিয়ে-শাদি, অনুষ্ঠান সবই বন্ধ রাখতে হবে। যেখানে ভিড় হয় সে জায়গা এড়িয়ে চলতে হবে। বাজারে বা বাইরে গেলে ঘরে ফিরে গরম পানির ভাপ নিতে হবে। পর্যটন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ। বিমানে করে বিদেশ থেকে কেউ এলে তাকে কোয়ারেন্টিন করতে হবে। অবাধে চলাফেরা শুরু করেছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন