সীমান্তের ওপারে তুমুল সংঘর্ষ, চক্কর কাটছে যুদ্ধবিমান

fec-image

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন জুড়ে দীর্ঘ ২ বছর ধরে চলমান জান্তা বাহিনীর সাথে বিদ্রোহী আরকান আর্মির লড়াই চলছে জোরেশোরে।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) চলমান যুদ্ধের অংশ হিসেবে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কাছাকাছি ৪৫ পিলার সীমান্তের ওপারে যুদ্ধবিমান নিয়ে চক্কর দিচ্ছে জান্তা বাহিনী।

বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে এপারের জামছড়ি সীমান্তের প্রতীকী নাম মোহাম্মদ জাফর ও মোহাম্মদ রশিদ পার্বত্যনিউজকে জানান, শনিবার সকাল ৮ টার পর ৩ বার আর বিকেল সাড়ে ৪ টার পর ৪ বার মিয়ানমারের বিমান বাহিনীর ১টি যুদ্ধবিমান জামছড়ি গ্রামের ওপরে রাখাইনের অংশে আকাশ দিয়ে চক্কর দিয়ে ফকিরা বাজারের দিকে চলে যায়।

ধারনা করা হচ্ছে, বিমানটি ফকিরা বাজারে জান্তা বাহিনীর একটি বড়সড় সেনা ঘাঁটি দখলে নিতে বিদ্রোহী আরকান আর্মি চতুর্দিক থেকে হামলা চালানোর জেরে এ বিমান হামলা করছে জান্তা বাহিনী। এ সময় বাংলাদেশ সীমান্তের অধিবাসীরা বিমানের এ দৃশ্য দেখেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানায়ায়, বর্তমানে সেখানে (ফকিরা বাজারে) ২ দিন ধরে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। এ ঘটনায় পরাস্ত হয়ে জান্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশের দিকে চলে আসতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

এ কারণে সীমান্তে বিজিবিকে সতর্ক রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবির একটি সূত্র।

বিষয় নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, সীমান্তে যুদ্ধবিমান চক্করের বিষয়টি জানতে পেরে বান্দরবান জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিমানের চক্কর ও গোলাগুলির আওয়াজ এপারের সীমান্তে কোন প্রভাব নেই।

অপর দিকে সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, চলমান দীর্ঘ দুই মাসের যুদ্ধে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী টিকতে পারছে না। বিশেষ করে এ যুদ্ধে শক্তিশালী মর্টার শেল ও ভারী অস্ত্র বিস্ফোরণে মংডুসহ রাখাইন টাউনশিপের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া সেখানে পানীয়জল, জ্বালানি ও খাদ্যসামগ্রীর তীব্র সংকট দেখা দেয়।

সূত্র আরও জানায়, আরকান আর্মির সঙ্গে টিকতে না পেরে সরকারি বাহিনীর লোকজন মংডু টাউনশিপের পেছনে কালাদান পাহাড়ে আত্মগোপন করছে। আবার নতুন নতুন ক্যাম্প ও সেনা ব্যাটালিয়ন দখলে মরিয়া হয়ে হামলা করছে বিদ্রোহী আরকান আর্মি সশস্ত্র গোষ্ঠী।

ইতিপূর্বে সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৩ সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

এর আগে ১১ মার্চ আশ্রয় নেন আরও ১৭৭ জন বিজিবি ও সেনাসদস্য। তাঁরা সবাই বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১১ বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) হেফাজতে রয়েছে।

এরও আগে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন জান্তা সদস্য।

তাদেরকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল কক্সবাজারের ইনানী নৌবাহিনীর জেটি ঘাট দিয়ে।বর্তমানে সীমান্তের কাছাকাছি ওপারে যুদ্ধবিমানের চক্কর, ফকিরা বাজারে তুমুল সংঘর্ষ চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন