১৩ দফা না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে : হেফাজত

নিউজ ডেস্ক :

 ১৩ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। ফরিদপুরের সমাবেশে  বক্তারা বলেছেন, ১৩ দফা দাবি মানা না হলে আগামী ৫ মে শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকা অবরোধ করা হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। হেফাজতের আন্দোলন কোনো দলকে বাঁচাতে নয়, শুধু মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-কে কটূক্তিকারী ব্লগারদের বিচার করার জন্য।শুক্রবার শহরের গোয়ালচামট এলাকার ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে মহাসমাবেশ বক্তারা এ হুঁশিয়ারি দেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, লংমার্চে বাধা দিয়েছেন আমরা প্রতিবাদ করেছি, আগামী ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে কোনো রকম বাধা দিলে প্রতিবাদ নয়  প্রতিরোধ করা হবে।

বক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ কারণ তিনি বলেছেন মদিনা সনদ অনুযায়ী দেশ চালাতে হবে। তবে তার আগে প্রধানমন্ত্রীকে মদিনা সনদ সম্পর্কে জানতে হবে আর এ সনদ সম্পর্কে জানতে হলে আল্লামা আহমেদ শফিকে লাগবে। বক্তারা বলেন, গোপালগঞ্জের ধীরেন বিশ্বাস মদিনা সনদের ব্যাখ্যা দিলে তো হবে না।

বক্তারা গত ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের দিনে ভাঙ্গায় সহিংসতার জন্য ওইদিনের হরতাল সমর্থকদের দায়ী করেন এবং ওই ঘটনায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারসহ আটক ১৪ নেতাকর্মীর মুক্তি চান। অন্যথায় সারাদেশ থেকে ভাঙ্গা অভিমুখে লংমার্চ করা হবে বলে বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন।
 
হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, আগামী ৫ মের মধ্যে ১৩ দফা মেনে নিন। তারা বলেন, আগামীতে যারা ক্ষমতায় থাকবে আর দেশ চালাবে তাদের ১৩ দফা মেনেই ক্ষমতায় থাকতে হবে।

বক্তারা বলেন, দৈনিক আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান দেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের কণ্ঠ। নাস্তিক মুরতাদদের দাবি মেনে তাকে আটক করে সরকার ইসলামের কণ্ঠকে বন্ধ করে দিতে চায়। তারা বলেন, এই সরকার মাহমুদুর রহমানকে শুধু আটক করেনি, তাকে রিমান্ডে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করেছে। মাহমুদুর রহমান আটকের পর থেকে অনশন করেছেন, প্রয়োজনে মাহমুদুর রহমানের জন্য দেশের অগণিত মুসলমান অনশন করবে। বক্তারা অবিলম্মে তার মুক্তি ও আমার দেশের প্রেস খুলে দেয়ার দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, হেফাজতে ইসলাম সম্পূর্ণ একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। আমরা কাউকে ক্ষমতায় বসানো বা ক্ষমতা থেকে উৎখাতের জন্য আন্দোলন করছি না। এ আন্দোলন ইসলাম ও ঈমান রক্ষার আন্দোলন।

শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকার সমাবেশস্থলে সকাল থেকেই মুসল্লিরা আসা শুরু করলেও জুমার নামাজের পর সমাবেশের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। জেলার প্রতিটি উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ,  কুষ্টিয়া থেকে বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্রসহ সাধারণ মুসল্লিরা স্লোগান দিয়ে সমাবেশে যোগদান করেন। এ সময় আগত হেফাজতের নেতাকর্মীরা হাতে জাতীয় পতাকা বহন করে।

দুপুর সাড়ে ১২টায় জুমার আযানের সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চের মাইক বন্ধ করে দিয়ে বিরতি ঘোষণা করা হয়। জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। ৩টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে আসলেও ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক নূর হুসাইন কাসেমী মঞ্চে আসেন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সভার কার্যক্রম চলে। সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও স্থানীয় নেতারা বক্তৃতা করেন। মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মো. জহুরুল হক।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন  ঢাকা মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা ইসাহাক, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা মুজিবুর রহমান কুশিয়ারী, মাওলানা মুফতি সাখাওয়াত হোসেন, মাওলানা মুফতি হাবিবুর রহমান, মাওলানা মো. জাফরুল্লাহ, মুফতি মো. ওয়াক্কাস, মাওলানা মো. ইসাহাক, মাওলানা ওহাব, মাওলানা লিয়াকত আলী, মাওলানা মোজাম্মেল হক, মাওলানা ইব্রাহীম, মাওলানা ইসমাইল, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাসরুর, হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।

সমাবেশ চলাকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সাংসদ শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর হেফাজতের সমাবেশে হাত তুলে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

One Reply to “১৩ দফা না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে : হেফাজত”

  1. হেফাজতে ইসলামের এই আন্দোলনকে স্বাগত জানাই ।এই বাংলার মাটিতে যারা নাস্তিকদের বিচার চাই না ,করে না ,বাধা সৃষ্টি করে ,মুক্তি চায় তারাও নাস্তিকদের সমতুল্য ।এমনকি এই নাস্তিকদের মুক্তি যারা চায় এদেরকেও বিচারের আওতায় এনে বিচার করতে হবে ।সোনার বাংলাদেশে যারা রাসূল(স)অবমাননা করে দেশকে অপবিত্র করেছে এদের শাস্তি হবেই হবে ।মুসলমানদের বিজয় হবেই হবে ।বাতিলদের কোন পরাশক্তিই এ বিজয় ঠেকাতে পারবে না ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন