১৫ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন, প্রচারণায় উৎসবমুখর চবি ক্যাম্পাস



চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা। শিক্ষার্থীরা মুখিয়ে আছে ১৫ অক্টোবর ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য। নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। সৃষ্টি হয়েছে এক অনন্য সম্প্রীতির পরিবেশ। একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে চাইছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এজন্য তারা একাধিক বৈঠক করছেন সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সাথে। এসব সমন্বয় সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জোর দেয়া হচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা যায়, আসন্ন চাকসু নির্বাচনে ১৩টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ইতোমধ্যে ৯টি প্যানেল তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের সবধরনের সমস্যা ও সঙ্কট ইশতেহারগুলোতে তুলে ধরা হয়েছে। আবাসন সঙ্কট নিরসনে অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়াও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, গণতান্ত্রিক ও নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়া, নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়া, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দেয়া, খাবারের মান উন্নত করা, স্বাস্থ্যসেবার পরিধি ও মান বাড়ানো, অ্যাকাডেমিক সমস্যাগুলো দূর করা এবং ক্যাম্পাস জব চালু করাসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা এখন এসব প্যানেলের নির্বাচনী ইশতেহার যেমনি পর্যালোচনা করছেন তেমনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তবতায় কারা নিজেদের প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে সক্ষম সেটিও বিবেচনায় নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সদ্য সমাপ্ত ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজয়ী প্যানেলগুলোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের বিদ্যমান অবস্থাও বিবেচনায় নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ডাকসুর বিজয়ী প্যানেলের তৎরপরতাও গুরুত্বসহকারে নিচ্ছেন বলে শিক্ষার্থীরা জানান।
ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের ইশতেহারে ৯টি মূল বিষয় ধরে ১২ মাসে ৩৩ দফা সংস্কারের কথা রয়েছে। নির্বাচনে জিততে পারলে তারা ১২ মাসে এসব দফা বাস্তবায়নে মনোযোগী হবেন।
অন্য দিকে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ইশতেহারে দফা রয়েছে ৮টি। এ দিকে নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে পারস্পরিক দোষারোপের প্রবণতাও তত বাড়ছে। তবে যেসব বিষয়ে অভিযোগ করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কাছে সেসব তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না।
ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ : চাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সাথে সন্দেহজনক ব্যক্তিদের তল্লøাশির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ১৫ অক্টোবর দীর্ঘ ৩৬ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসন দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। এ লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ সীমিত করার পাশাপাশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সবসময় পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড বা ব্যাংক রসিদ) সাথে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া প্রক্টরিয়াল বডি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনবোধে তল্লাশি চালানোর ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবার সহযোগিতা কামনা করে জানিয়েছে, আসন্ন চাকসু নির্বাচনকে ঘিরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে তারা কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

















