অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ

আইসিসির জটিল সমীকরণে আটকা বাংলাদেশের বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল

fec-image

২০২০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেই এসেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সাফল্য। আকবর আলী, তানজিদ হাসান তামিম, তাওহীদ হৃদয়, শরীফুল ইসলামরা জয় করেছিলেন যুব বিশ্বকাপের শিরোপা। হোক সেটা বয়সভিত্তিক দল, তবু বিশ্বসেরার খেতাব ঠিকই নিজেদের করে নিয়েছিল টাইগার যুবারা। যারা এখন জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য।

চার বছর পর আবার দক্ষিণ আফ্রিকায় আরেকটি যুব বিশ্বকাপের আসর। এবার বাংলাদেশ সেখানে গিয়েছে এশিয়ার সেরা দল হয়ে। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে দুই জয় নিয়ে উঠেছে সুপার সিক্সে। কিন্তু সেখানে এসে আচমকা অস্বস্তি বাংলাদেশ শিবিরে। আইসিসির জটিল সমীকরণের মারপ্যাঁচে বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন দেখাও বাংলাদেশের জন্য এখন কিছুটা বাড়াবাড়ি।

সাধারণত নকআউট পর্ব মানেই গ্রুপের পর্বের সব হিসেবনিকেশ থেকে মুক্তি। কিন্তু, যুব বিশ্বকাপে আইসিসি এমন এক নিয়মের প্রবর্তন করেছে, যার ফলে খুব সহজে নিস্তার পাচ্ছে না বাংলাদেশ।

সুপার সিক্সের জটিলতা
এবারের সুপার সিক্সে থাকবে গ্রুপিং সিস্টেম। পয়েন্টের হিসেবেও আছে নতুন নিয়ম। ছয় দলের একেক গ্রুপে প্রতিটি দল ম্যাচ খেলবে দুইটি করে। বিশ্বকাপের ‘এ’ ও ‘ডি’ গ্রুপ থেকে সেরা তিন অর্থাৎ মোট ছয়টি দল নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি গ্রুপ। আরেক গ্রুপে থাকবে ‘বি’ ও ‘সি’ গ্রুপের তিনটি করে মোট ছয় দল।

এই পর্বে নিজ গ্রুপ বাদ দিয়ে অন্য গ্রুপের দুই দলের বিপক্ষে খেলবে দলগুলো। এমনকি প্রতিপক্ষ গ্রুপের সমপর্যায়ের দলের বিপক্ষেও খেলতে হবে না তাদের। যেমন ‘এ’ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় হয়ে উঠে আসা বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ‘ডি’ গ্রুপের ১ম এবং ৩য় দল। ডি গ্রুপে প্রথম ছিল পাকিস্তান আর তৃতীয় ছিল নেপাল। যুবা টাইগাররা খেলবে এই দুই দলের বিপক্ষে।

আবার ভারত এবং পাকিস্তান নিজ নিজ গ্রুপে সেরা হওয়ায় সমপর্যায়ের নিয়মের ভিত্তিতে একে অন্যের বিপক্ষে খেলবে না। ভারতের খেলা ‘ডি’ গ্রুপের ২য় হওয়া নিউজিল্যান্ড এবং তিনে থাকা নেপাল।

পয়েন্ট হিসাব
বাংলাদেশের সুপার সিক্সের গ্রুপে পয়েন্টের ভিত্তিতে এগিয়ে আছে ভারত এবং পাকিস্তান। এবারের সুপার সিক্সে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ক্যারি পয়েন্ট। গ্রুপ পর্বের জয়-পরাজয়ের ভিত্তিতে ঠিক হয় এটি। প্রথম পর্বে বাংলাদেশ জিতেছিল আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। যুক্তরাষ্ট্র সুপার সিক্সে না উঠায় এই পয়েন্ট ক্যারি হচ্ছে না। অর্থাৎ গ্রুপ পর্বে ৪ পয়েন্ট পাওয়ার পরেও সুপার সিক্সে ২ পয়েন্ট নিয়ে শুরু করবে মাহফুজুর রহমান রাব্বিরা।

অন্যদিকে ভারত এবং পাকিস্তান দুই দলই নিজ নিজ গ্রুপে সব ম্যাচ জয় করেছিল। তাদের মোট পয়েন্ট ছিল ৬। ক্যারি হিসেবে তারা সুপার সিক্স শুরু করবে ৪ পয়েন্ট নিয়ে।

বাংলাদেশের সামনে সমীকরণ কী?
যেহেতু আগেই দুই পয়েন্ট পিছিয়ে বাংলাদেশ। তাই সুপার সিক্সে নিজেদের দুই ম্যাচেই জয় দরকার জুনিয়র টাইগারদের। শুধু জয় পেলেই হবে না। রানরেটও এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে। তাই যতটা সম্ভব বড় ব্যবধানে জয় দরকার স্টুয়ার্ট ল’ এর শিষ্যদের।

নিজেদের দুই ম্যাচে জয় পেলেই হবে না বাংলাদেশের। কারণ ভারত বা পাকিস্তান যদি নিজেদের দুই ম্যাচেই জয় পায়, তবে তাদের পয়েন্ট হবে ৮। আর বাংলাদেশের হবে ৬। সেক্ষেত্রে বাদ যাবে বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের প্রার্থনায় থাকবে ভারত এবং পাকিস্তানের হার। দুই দল আবার এক ম্যাচ করে হারলে এবং বাংলাদেশ দুই ম্যাচেই জিতলে আসবে নেট রানরেটের হিসাব।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ ক্রিকেট, যুব বিশ্বকাপ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন