কক্সবাজারে তিনদিন ব্যাপী ইজতেমা শুরু, মুসল্লিদের ঢল

fec-image

কক্সবাজারে তিনদিন ব্যাপী জেলা ইজতেমা বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে সমুদ্র সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্টের উত্তরপাশের ঝাউবাগানের মাঠে শুরু হয়েছে। তিনদিন ব্যাপী ইজতেমার প্রথম দিনেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে মাঠ। হাজারো মুসল্লির কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে আল্লাহু আকবর। শুক্রবার আরো বিপুল সংখ্যক মুসল্লির সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।

শনিবার দুপুরের আগে আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে কক্সবাজারের তিনদিন ব্যাপী এই ইজতেমা। তাবলীগ জামাতের মুফতি মাওলানা মোর্শেদুল আলম ফজরের নামাজের পর বয়ানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন ইজতেমার কার্যক্রম। শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করতে সমবেত হবেন লাখো মুসল্লি। আল্লাহ আকবর ধ্বনিতে মূখরিত হয়ে উঠবে ইজতেমা ময়দান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মুসল্লিরা কাঁধে-পিঠে প্রয়োজনীয় মালামালের গাঁইট ও ব্যাগ নিয়ে মাঠের নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নিচ্ছেন। আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত মুসল্লিদের এ আগমণ অব্যাহত থাকবে। বুধবার থেকেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামাতবদ্ধ মুসল্লিরা এসে ময়দানের খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। সৈকত নন্দনী কক্সবাজারের এই বালিয়াড়ীতে ইজতেমাস্থল এখন মুসল্লিদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে। ইজতেমায় প্রথম দিনে জেলার ৮ উপজেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানের মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেছেন।

আয়োজকরা জানান, ‘ইজতেমার মূল উদ্দেশ্য হলো তাবলিগে যাওয়ার জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা।’ এবারের ইজতেমার পর প্রায় ২০/৩০ হাজার মানুষ তাবলিগের চিল্লায় যাবেন বলেও তারা আশা করছেন। এদিকে ইজতেমার মাঠে সরেজমিনে গিয়ে আরো দেখা গেছে, মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইজতেমা মাঠের প্রবেশ দ্বারে ৩ স্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ইজতেমার নিরাপত্তায় প্রায় ২০০শ পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।

এছাড়া আনসার ও তাবলীগ জামাতের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন প্রায় ৫০০ জন। পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, ভিন্ন ভিন্ন দলে ভাগ হয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে কাজ করছে পুলিশ সদস্যরা। পুরো ময়দানকে ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে নিরাপত্তা বলয়। ইজতেমা উপলক্ষে ৪৫০ ফুট বাই ১৪৫০ ফুট সাইজের প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে কমপক্ষে ১ লক্ষ লোক ৩ দিন থাকতে পারবেন। এছাড়া ৭৫০ টি টয়লেট, ১ হাজার প্রসাবখানা, ১০০ টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। পয়:নিস্কাশনে যথেষ্ট ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভিআইপি ও ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে আসা মেহমানদের থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে।

চিকিৎসা : ইজতেমা ময়দানে ৫টি অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। আগত লোকজন খুব দ্রুততম সময়ে এই ক্যাম্প থেকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে। এ ছাড়াও পানির সমস্যা সমাধানে অস্থায়ী ভাবে বসানো হয়েছে অগভীর নলকুপ। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানিয়েছেন, ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসন সম্পুর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। সাদা শোকাকধারী পুলিশ, গোয়েন্দা ও র‌্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন