চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে সরকারি জায়গা অবৈধ দখলের অভিযোগ


প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কক্সবাজারের চকরিয়ায় ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষা প্রায় ৫ শতক জমি অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বসতবাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয়রা। স্থাপনা নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখতে ইতিমধ্যে প্রশাসন থেকে নির্দেশনা দেয়া হলেও তা উপেক্ষা করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন মোহাম্মদ ইউনুছ নামে এক ব্যক্তি। দ্রুত নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে প্রশাসনের কাছে জরুরি হস্তক্ষেপ চাইছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ফাঁসিয়াখালী মৌজার সৃজিত বিএস ৪৪৬ নম্বর খতিয়ানের ৫০ শতক জায়গা ইউনিয়ন পরিষদের নামে বিএস রেকর্ডমূলে চুডান্ত প্রচার রয়েছে। এরমধ্যে খতিয়ানের বিএস ৭৬১ নম্বর দাগে সচিব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জেলা প্রশাসক কক্সবাজার অনুকূলে ১৮ শতক জায়গা পরিষদের অনুকূলে বিদ্যমান। এমতবস্থায় ইউনিয়নের মৃত মকছুদুর রহমানের ছেলে মৌলভী মোহাম্মদ ইউনুছ কোনো অদৃশ্য ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে পরিষদের খতিয়ানভুক্ত সরকারি জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছেন।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করেন, সরকারি জায়গা দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণের কাজ বন্ধ করা না হলে ইউনিয়ন পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন। স্থানীয়দের দাবি, তারা চাই প্রশাসন যেন দ্রুততম সময়ে স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। একজন সার্ভেয়ারের মাধ্যমে যতদিন পর্যন্ত জায়গার পরিমাপ নির্ণয় করা না হয়, ততোদিন পর্যন্ত নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার জন্য দাবি করেছেন। চকরিয়া উপজেলার ইউএনও, এসিল্যান্ড ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এদিকে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক রূপায়ন দেব কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার শাহেদুল মোস্তফা।
তিনি বলেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা দখল নিয়ে রাতারাতি স্থাপনা নির্মাণ করায় কাজ বন্ধের বিরুদ্ধে দায়িত্বরত পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ন দেব’র কাছে আবেদন করা হয়। তিনি ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে ঘটনার বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হয়ে ইউপি সচিব হুমায়ুন কবির মাধ্যমে কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেন। কিন্ত পরিষদের জায়গা অবৈধ ভাবে দখলে নেওয়া ব্যক্তি মৌলভী ইউনুছ প্রশাসনের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্থাপনা নির্মাণ কাজ এখনো অব্যাহত রেখেছেন।
তিনি আরো বলেন–ইউনিয়ন পরিষদের এই জায়গাটি সরকারি সম্পত্তি। বর্তমান সময়ে কার ক্ষমতার প্রভাবে বা কোন অদৃশ্য ইশারায় প্রকাশ্যে ভাবে পরিষদের জায়গা দখল নিয়ে রাতারাতি স্থাপন নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছেন এই দু:সাহস কোথাও থেকে পেয়েছে তা বোধগম্য হচ্ছে। পরিষদের সরকারি জায়গা দখলের এই অপচেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এদিকে, পরিষদের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা মৌলভী মোহাম্মদ ইউনুছের কাছে জানতে চাইলে বলেন- তাদের পৈত্রিক নিজস্ব খতিয়ানের জায়গায় স্থাপন করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন। এখানে পরিষদের কোন ধরণের জায়গা নেই বলে অবগত করেন তিনি।
চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক রূপায়ন দেব কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- পরিষদের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি অবগত করা হলে ইউপি সচিবের মাধ্যমে বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সরকারি জায়গায় কোনো ব্যক্তি বা পক্ষ অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। ঘটনাটি সরেজমিন পরিদর্শন করে সার্ভেয়ার মাধ্যমে পরিমাপ করা হবে। তাছাড়া নির্দেশনা অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ করে থাকলে সার্ভে করার পরে দখল উচ্ছেদ করা হবে বলে তিনি জানান।
















