জীবনেও খাবেন না ভাত, বলবেন না কথা

fec-image

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল বাইটকা টারির এলাকার রঞ্জিত সাধু। ভারতে তীর্থস্থান ভ্রমণ করতে গিয়ে প্রতিজ্ঞা করেছেন জীবনে খাবেন না ভাত এবং বলবেন না কথা।

এরইমধ্যে পেরিয়ে গেছে দুটি বছর। এসময়ে ভাত মুখে দেননি রঞ্জিত সাধু। ভাতের পরিবর্তে কলা, ভুট্টার গুঁড়া, চালের গুঁড়া, শাকসবজি খেয়ে একাকী নদীর ধারে বাড়ি ও উপাসনালয় তৈরি করে বসবাস করছেন তিনি। শুধু তাই নয়, কথাও বলেননি কারো সঙ্গে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, তিন বছর আগে ভারতে তীর্থস্থান ভ্রমণে যান রঞ্জিত সাধু। পরে সেখান থেকে ফিরে এসে বলেন, সংসার হলো কামনা-বাসনা। সেখানে থেকে ধর্মীয় কাজ সিদ্ধ করা সম্ভব না। তাই সংসারের মায়া থেকে দূরে গিয়ে একাকিত্বভাবে জীবন অতিবাহিত করবেন। সাধুদের কথা না বলাই শ্রেয়। এজন্য তিনি কথা বলবেন না, ভাতও খাবেন না। তবে প্রয়োজনে খাতায় লিখে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করেন রঞ্জিত।

এ বিষয়ে তার ভাতিজা নন্দী রায় বলেন, ‘কাকা ভারতের সাধুদের জীবনযাপন অনুসরণ করে এমন সংকল্প করেছেন। আমরা তাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। কারণ আমরা ওনার মতো ধর্মপালন করতে পারি না। তিনি খাদ্য হিসেবে শুধু শাকসবজি, ডাল, ভুট্টা গুঁড়া খেয়ে বেঁচে আছেন।’

রঞ্জিত সাধুর বড় ছেলে হীরেন্দ্র নাথ রায় বলেন, ‘বাবা ভারত থেকে আসার পর জানান, তিনি ১২ বছর বাসায় আসবেন না, কথাও বলবেন না। আরও জানান, তিনি ভাতও খাবেন না। বিষয়টি আমাদের প্রথমদিকে একটু খারাপ লাগলেও এখন আর কষ্ট হয় না।

তিনি আরও বলেন, ‘একাকি বসবাসের জন্য বাবা নদীর পাড়ে খড়ের ঝুপড়ি ঘর তৈরি করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে বৃষ্টি ও ঝড়ে ঘরটি ভেঙে গেলে আমরা নতুন করে একটি উপাসনালয় ও থাকার মতো একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে দেই।’

‘বাবা পরিবারের কারো সঙ্গে দেখা করতে যান না। আমরা পরিবারের লোক মাঝে মধ্যে এসে দেখা করে যাই। কিছু বলার থাকলে খাতায় লিখে আশপাশের কারো হাতে দেয়’, যোগ করেন হীরেন্দ্র নাথ রায়।

রঞ্জিত সাধু খাতায় লিখে গণমাধ্যমকে জানায়, ‘সংসার হলো কামনা-বাসনা। ১২ বছর পার হলেও আমি আর সংসারে ফিরে যাবো না। এখানে আমি জীবন শেষ করতে চাই। আমাকে যেন সংসারে ফিরিয়ে না নেওয়া হয়।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন