টেকনাফে চলছে লাইসেন্স-রেজিস্ট্রেশনহীন ফিশিং ট্রলার

teknaf pic boat

টেকনাফ প্রতিনিধি:
টেকনাফের উপকূলে সাগর ও নদীতে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত ট্রলারগুলোতে লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন কিছুই নেই। এ ভাবেই চলছে যুগ যুগ ধরে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিলেও এ পর্যন্ত ফিশিং ট্রলার গুলোকে রেজিস্ট্রেশন এবং লাইসেন্সিং এর আওতায় আনতে পারেনি। টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার সৈয়দ হুমায়ুন মোরশেদ গতকাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সরকারী নীতিমালা বাস্তবায়নে কড়াকড়ি এবং বাধ্যবাদকতা না থাকায় একদিকে যেমন সরকার এই খাত থেকে প্রচুর রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে সাগরে এবং নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে জেলে ও নৌযান সমূহ দ্বৈব-দূর্বিপাকে এবং আইনগত জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সেই সাথে সরকারী উদ্যোগ ও নির্দেশনার সফলতা পচ্ছেনা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী টেকনাফ উপজেলায় সরকারী পরিসংখ্যান মতে মৎস্য নির্ভর জীবন-জীবিকায় নিয়োজিত আছেন ২২ হাজার জেলে। যান্ত্রিক নৌযানের সংখ্যা ৮৭৬টি এবং অযান্ত্রিক নৌযান ২৫৫টি। যান্ত্রিক মৎস্য নৌযানের রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্সের জন্য ৫০ টাকা মূল্যমানের ২টি স্ট্যাম্প, নৌযান নির্মাণকারী মিস্ত্রীর নাম-ঠিকানা, মালিকের নাম-ঠিকানা, ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকফি ও পাসপোর্ট সাইজ ছবি, নৌযানের নাম, দৈর্ঘ-প্রস্থ ও গভীরতা, নৌযানে ব্যবহৃত ইঞ্জিনের মডেল নম্বার ও অশ্বশক্তি, নিয়োজিত মাঝির নাম-ঠিাকানা, গ্রস- টনেস হারে নৌযানের রেজিস্ট্রেশন ফি, ইঞ্জিন ক্রয়ের রসিদ, নাম সম্বলিত নৌযানের ছবি ইত্যাদি প্রয়োজনীীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। রেজিস্ট্রেশনের জন্য কোন ফি দিতে হয়না। শুধু নৌযানের আয়তন অনুসারে লাইসেন্স ফি দিতে হয়। যা প্রতি বছর নবায়নযোগ্য।

লাইসেন্স ফি নির্ধারণের ক্ষেত্রে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত নৌযান গুলোকে “চিংড়ি ও সাদা মাছ” এই দু’ভাবে ভাগ করা হয়েছে। সাদা মাছের চেয়ে চিংড়ি নৌযানের লাইসেন্স ফি কিছুটা বেশী। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত লাইসেন্সের বার্ষিক ফি হচ্ছে -১০ টন বিশিষ্ট নৌযান সাদা মাছ ৭৫০টাকা ও চিংড়ি ১হাজার টাকা, ১০-২৫ টন বিশিষ্ট নৌযান সাদা মাছ ১হাজার ৩০০টাকা ও চিংড়ি ১হাজার ৭৫০টাকা, ২৫-৪০ টন বিশিষ্ট নৌযান সাদা মাছ ২হাজার ৫০০টাকা ও চিংড়ি ৩ হাজার ২৫০টাকা, ৪০-৬০ টন বিশিষ্ট নৌযান সাদা মাছ ৩ হাজার ৭৫০টাকা ও চিংড়ি ৫ হাজার টাকা, ৬০-১০০ টন বিশিষ্ট নৌযান সাদা মাছ ৭হাজার টাকা ও চিংড়ি ১০ হাজার টাকা, ১০০-২০০ টন বিশিষ্ট নৌযান সাদা মাছ ১৪ হাজার টাকা ও চিংড়ি ২০ হাজার টাকা, ২০০-৩০০ টন বিশিষ্ট নৌযান সাদা মাছ ২০হাজার টাকা ও চিংড়ি ৩০ হাজার টাকা, ৩০০-৪৫০ টন বিশিষ্ট নৌযান সাদা মাছ ৩০ হাজার টাকা ও চিংড়ি ৪০ হাজার টাকা, ৪৫০-৬০০ টন বিশিষ্ট নৌযান সাদা মাছ ৪৫ হাজার টাকা ও চিংড়ি ৫৫ হাজার টাকা, ৬০০ টন বিশিষ্ট নৌযান সাদা মাছ ৫০ হাজার টাকা ও চিংড়ি ৭৫ হাজার টাকা।

টেকনাফের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈয়দ হুমায়ুন মোরেশেদ বলেন, বিষয়টি উপজেলা মাসিক সভায় একাধিকবার উত্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া জেলে পল্লীগুলোতে প্রচারণা চালানো সত্ত্বেও সরকারী এই নির্দেশনা এখনো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে শীঘ্রই যৌথ অভিযান চালানো হবে। তবে বর্তমানে জেলেদের নিবন্ধন কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন