তুরস্কের দিকে নজর দিচ্ছে ইসরায়েল

fec-image

কাতারের দোহায় গত সপ্তাহে হামলার পর এবার তুরস্কের দিকে নজর দিচ্ছে ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থীরা। একাধিক ডানপন্থী বিশ্লেষক ও সংবাদমাধ্যম ইসরায়েলের শত্রু ও পরবর্তী লক্ষ্য হিসেবে তুরস্কের নাম উল্লেখ করেছে।

তাদেরই একজন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত ডানপন্থী থিংক-ট্যাংক আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ ফেলো মাইকেল রুবিন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, তুরস্ক হতে পারে ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য। সুতরাং এই সম্ভাব্য হামলা থেকে সুরক্ষা পেতে ন্যাটোর সদস্যদের ওপর ভরসা করা তুরস্কের জন্য উচিত কাজ হবে না।

তুরস্ক ন্যাটোর সদস্য দেশ। আর্টিকেল-৫ অনুযায়ী, ন্যাটোর কোনো একটি দেশের ওপর হামলা হলে বাকি সদস্যরাও সেটিকে নিজেদের ওপর হামলা ধরে নিয়ে জবাব দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে কাতারের ওপর হামলার ঘটনা এই ভরসায় চিড় ধরিয়েছে। ন্যাটোর সদস্য না হলেও কাতার যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত ঘনিষ্ট মিত্র। দেশটিতে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি থাকার কারণে তারা এক ধরনের নিরাপত্তার আশ্বাস পায়। কিন্তু এরপরও ইসরায়েল হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে দোহায় হামলা চালিয়েছে।

মাইকেল রুবিনের মতো আঙ্কারাকে (তুরস্কের রাজধানী) তেল আবিবের পরবর্তী লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ইসরায়েলি শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মেইর মাসরি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘আজ কাতার, আগামীকাল তুরস্ক।’

ইসরায়েলি ডানপন্থীদের এসব পূর্বাভাসের কঠোর ভাষায় জবাব দিয়েছে তুরস্ক। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের একজন শীর্ষ উপদেষ্টা লিখেছেন, ‘ইসরায়েলের জায়নবাদী কুকুরদের বলছি… শিগগিরই তোমাদের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা হবে। এরপরই বিশ্বে শান্তি নেমে আসবে।’

বিশ্লেষকদের পাশাপাশি প্রায় এক মাস ধরে ইসরায়েলপন্থী সংবাদমাধ্যমগুলো তুরস্ককে নিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। সেগুলোতে তীব্র তুরস্কবিরোধী ভাষা ও দেশটিকে ইসরায়েলের সবচেয়ে বিপজ্জনক শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশেষ করে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের উপস্থিতিকে ‘হুমকি’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া, গৃহযুদ্ধ পরবর্তী সিরিয়া পুনর্গঠনে তুরস্কের ভূমিকাকে ‘নতুন বিপদ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত মাসে ইসরায়েলের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করে তুরস্ক। মূলত ইসরায়েলের আঞ্চলিক আগ্রাসন বৃদ্ধি ও গাজায় যুদ্ধ বন্ধের কোনো আলামত না থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেয় তুরস্ক। আটলান্টিক কাউন্সিলের ফেলো ওমর ওজকিজিলচিক বলেন, তুরস্ক বিরোধী এসব মতামতকে আঙ্কারা গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে। কারণ, আঙ্কারা মনে করছে, মার্কিন সমর্থন থাকায় ইসরায়েল আগ্রাসন চালাতে কোনো বাধা মানছে না।

ওজকিজিলচিক আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোর অনেক আগেই তুরস্ক একটি বিষয় উপলব্ধি করেছে। সেটি হলো- নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ন্যাটোর ওপর ভরসা করা উচিত হবে না।

(আল জাজিরা থেকে সংক্ষেপে অনুবাদ)

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইসরায়েল, তুরস্ক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন