‘দেশের জার্সিতে খেলার সময় মেসিকে কখনও ক্লান্ত দেখিনি’

fec-image

লিওনেল মেসির পর আর্জেন্টিনা দলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার কে? অনেকেই একবাক্যে স্বীকার করবেন, তিনি অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ২৮ বছর পর আলবিসেলেস্তেদের কোপা আমেরিকা জয়ের অন্যতম নায়কও এই উইঙ্গার। ডি মারিয়ার নিজেকে মেলে ধরতে পারা না পারার ওপর অনেকখানি নির্ভর করছে কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শিরোপা জেতার স্বপ্ন।

এবারই ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে নামছেন। চোট সমস্যা কাটিয়ে কতটা তৈরি ডি মারিয়া? আর্জেন্টিনার এক সংবাদপত্রে নিজের এবং দলের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেছেন এই তারকা। আসুন দেখে নেই সেই সাক্ষাৎকারে কী কথা হলো-

প্রশ্ন: ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। এই নিয়ে টানা চতুর্থ বিশ্বকাপে খেলবেন। কী মনে হচ্ছে ক্যারিয়ারের একটা বৃত্ত সম্পন্ন হলো?

ডি মারিয়া: টানা চতুর্থবার বিশ্বকাপ খেলতে চলেছি। এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। মনে হচ্ছে, এই তো সেদিন শুরু করলাম। যখন পিছনে ফিরে তাকাই, দেশের হয়ে খেলতে পেরেছি বলে গর্ব বোধ করি। বছরের পর বছর আর্জেন্টিনার মতো দলে খেলে যাওয়া সহজ কথা নয়। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক সমালোচনা সহ্য করেছি। তা সামলেই জাতীয় দলের হয়ে ১২৪টা ম্যাচ খেলেছি। এই অনুভূতি বলে বোঝাতে পারব না। আর্জেন্টিনার জার্সিতে প্রতিটি ম্যাচ আমার কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন অভিজ্ঞতা। সেই টানেই আমি খেলি। আর এবার দেশের হয়ে এটাই হবে আমার শেষ বিশ্বকাপ। যে বিশ্বকাপ আমরা জিততে এসেছি।

প্রশ্ন: ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে বিপর্যয়ের পর বার্তা দিয়েছিলেন, কখনও জাতীয় দলকে ছেড়ে যাবেন না। তাহলে আজ কেন বলছেন, কাতারই শেষ বিশ্বকাপ?

ডি মারিয়া: দেখুন, যেখানেই খেলি না কেন, আমি সবসময় জাতীয় দলের সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করি। আর্জেন্টিনা কখনও ‘গিভ আপ’ করতে পারে না, সেটা মাথায় রেখেই ‘নেভার গিভ আপে’র কথাটা বলেছিলাম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সবকিছু বদলায়। গত মার্চে ভেনেজুয়েলা ম্যাচের পরেই ঠিক করে নিয়েছিলাম কাতারে খেললে, সেটাই হবে আমার শেষ বিশ্বকাপ।

প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে, লিওনেল স্কালোনির বিশ্বকাপের ভাবনায় আপনি ‘বহিরাগত’। ব্যাপারটা নিয়ে আপনাদের মধ্যে নাকি মতানৈক্য ঘটেছে?

ডি মারিয়া: দেখুন, আমাদের মধ্যে কোনও ভুল বোঝাবুঝি নেই। অনেকে অনেক কথাই বলেন। সেগুলো নির্বোধের প্রলাপ বলেই মনে করি। আমি সবসময় স্কালোনিকে বলেছি, আমি তোমার দলের সঙ্গে থাকতে চাই। যে ভূমিকায় ওর আমাকে প্রয়োজন, ও ব্যবহার করতে পারে। কারণ সবকিছুর ঊর্ধ্বে জাতীয় দল। লিও (স্কালোনি) কয়েক বছর আগেও নিজে খেলোয়াড় ছিল। ফলে কোচ হিসেবে ও খেলোয়াড়দের মনঃস্তত্ত্ব খুব ভালো বুঝবে।

প্রশ্ন: বিশ্বকাপের আগে চোট আপনাকে নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছিল আর্জেন্টিনা শিবিরে। নিজে কতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন কাতারে খেলার ব্যাপারে?

ডি মারিয়া: বিশ্বকাপের ঠিক আগে চোট লাগলে ভয় লাগবেই। আমারও লেগেছিল। তবে আমি বরাবর ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামলাই। জানি, যা হচ্ছে তা বদলানো যাবে না। আমাকে সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। চোট লাগার পর নিজেকে বুঝিয়েছি, কীভাবে দ্রুত সুস্থ হতে হবে। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, বিশ্বকাপের আগেই ফিট হয়ে যাব।

প্রশ্ন: সেই ২০০৮ থেকে মেসির পাশে খেলছেন। আপনার মতো এটা মেসিরও শেষ বিশ্বকাপ। কতটা ফোকাসড দেখছেন টিমমেটকে?
ডি মারিয়া: লিও’র সঙ্গে খেলতে পারাটা আমার কাছে গৌরবের। মেসি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। আমার চোখে লিও ভিনগ্রহের জীব। দেশের জার্সিতে খেলার সময় আমি ওকে কখনও ক্লান্ত হতে দেখিনি। আমরা একসঙ্গে অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ও এখন আরও পরিণত, আরও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। জাগোনিউজ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আর্জেন্টিনা, মেসি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন